by admin | Sep 10, 2019 | blog
পবিত্র শুভ মধু পূর্ণিমার তাৎপর্য
এস.জ্ঞানমিত্র ভিক্ষু
মধু পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাসে এক বিশেষ তাৎপর্যময় ঘটনা। এটি ভাদ্র মাসে উদ্যাপিত হয় বলে এটিকে ভাদ্র পূর্ণিমাও বলা হয়। এ পূর্ণিমার বিশেষ দিক হল বানর এবং হস্তীরাজ কর্তৃক বুদ্ধকে সেবা ও পূজা করার ঘটনা। কেননা, ত্রিপিটকে পশু কর্তৃক বুদ্ধকে পূজা ও সেবা দান করার দৃষ্টান্ত খুব বেশী নয়। বানর এবং হস্তীরাজের এরকম বিরল দৃষ্টান্ত আমরা যাঁরা সুদুর্লভ মানব জীবন লাভ করেছি আমাদের অনুকরণীয় তথা শিক্ষণীয় উদাহরণ বৈ কি!
ভগবান তথাগত বুদ্ধ গৌতমের সময়ে বর্তমান ভারতের উত্তর প্রদেশস্থ এলাহাবাদ হতে প্রায় ১২ মাইল উত্তর পশ্চিমে কৌশাম্বী নামে এক সুসমৃদ্ধশালী নগরে তথাগত খ্রিষ্টপূর্ব ৫৮০ অব্দে তাঁর জীবনের নবম বর্ষাবাস অতিবাহিত করেন। তখন সেখানে একটি বিহারে দুইজন ভিক্ষুর মধ্যে শৌচাগারে জল রাখা সম্পর্কিত বিনয় বিধান নিয়ে কলহ সৃষ্টি হয়। মহামুনি বুদ্ধ ভিক্ষুদের কলহ নিবারণার্থে ‘লটুকিকা’ জাতক, ‘বত্তক’ জাতক দেশনা করলেন। তাতেও ভিক্ষুদের কলহ নিবারিত না হলে রাজা দীঘীতির কাহিনী অর্থাৎ রাজা দীঘীতির উপদেশে কিভাবে রাজপুত্র দীর্ঘায়ু কুমার ও রাজা-রাজার স্ত্রীকে হত্যাকারী অপর রাজার মধ্যে মিত্রতা স্থাপন হয়েছিল সে বিষয় দেশনা করলেন। দেশনার পর মহামুনি সম্বুদ্ধ কলহরত ভিক্ষুদের উপলক্ষ করে বললেন, “হে ভিক্ষুগণ, এরূপ অস্ত্রশস্ত্র ধারী রাজাদের যদি প্রচন্ড শত্র“তা হতে মিলন হতে পারে তবে এমনতরো সু-আখ্যাত ধর্ম বিনয়ে প্রব্রজ্যিত হয়েও তোমরা কেন বিবাদ বিসম্বাদে লিপ্ত। তোমরা কলহ করোনা।” বুদ্ধের কথায় কলহপ্রিয় এক ভিক্ষু যিনি উলিখিত জাতকদ্বয় বর্ণনাকালেও বুদ্ধকে এ বিষয়ে মাথা না ঘামাতে বলেছিলেন তিনি এবারও তদ্রুপ বললে “মোঘপুরুষগণ অত্যন্ত কলহরত হয়ে গেছে, এদের চৈতন্যোদয় সহজ নয়”, এ ভেবে বুদ্ধ সেখান হতে চলে গেলেন। তদনন্তর তথাগত শাক্যসিংহ কৌশাম্বী থেকে বালক লোণকার গ্রাম এবং সেখান হতে প্রাচীন বংশদাব নামক স্থানে স্থবির অনুরুদ্ধ, স্থবির নন্দিয় এবং স্থবির কিম্বিলের সাথে সাক্ষাৎপূর্বক পারিল্যেয়ক নামক বনে প্রবেশ করলেন।
বর্ষাবাসের সময় ভগবান পারল্যেয় নামক সেই বনে বর্ষাবাস অধিষ্ঠান করলেন। যেটি ছিল বুদ্ধ জীবনের ১০ম বর্ষাবাস। সে সময় বুদ্ধ চিন্তা করলেন, “আমি পূর্বে সেই ভন্ডনকারী, কলহ লিপ্ত, বিবাদ-বিসম্বাদ প্রযুক্ত, বহুবৃথাবাক্য ব্যয়কারী ও নিত্য সংঘের নিকট অভিযোক্তা কৌশাম্বীবাসী ভিক্ষুগণ কর্তৃক উপদ্রুত হয়ে অনুকুলভাবে অবস্থান করতে পারি নি। এখন আমি তাদের কাছ থেকে পৃথক হয়ে স্বচ্ছন্দে বিহার করতে সমর্থ হচ্ছি।” সে সময় একটি বয়োবৃদ্ধ হস্তীরাজও অপরাপর হস্তী, হস্তীনী, তরুণ হস্তী ও হস্তীশাবক কর্তৃক নিগৃহীত হয়ে, অপুুষ্টিকর ও অখাদ্য খেয়ে অবস্থান করছিল। অপরাপর হস্তীরা তার গাঁ ঘেষে গমন করত। হস্তীরাজ কর্তৃক যোগাড়কৃত শাখা,পত্র-পলব খেয়ে ফেলত, পানীয় জল ঘোলা করে দিত। হস্তীরাজও এরকম হস্তীদের উপদ্রব হতে বাঁচার নিমিত্তে একাকী চলে আসল। অনন্তর হস্তীরাজও চিন্তা করল, “পূর্বে আমি হস্তীদের দ্বারা বিভিন্নভাবে নিপীড়িত নিগৃহীত হতাম, আর এখন তাদের ত্যাগ করে এসে মনানন্দে নির্বিঘ্নে অবস্থান করতে পারছি।”
ভগবান যে স্থানে অবস্থান নিয়েছিলেন সে স্থানটি কৌশাম্বী হতে সাত যোজন(এক যোজন = সাত মাইল দুরত্ব) দূরে এবং সেই বনটি ছিল তিন যোজন প্রমাণ। এই বনের রক্ষিতবনাঞ্চলে ভদ্রশাল বৃক্ষমূলে ভগবান অবস্থান করছিলেন। পারল্যেয় বনে অবস্থানের দরুণ বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাসে পারল্যেয় হস্তী নামে সমধিক পরিচিত সেই পূর্বোক্ত হস্তীরাজও বনমধ্যে বিচরণ সময় একাকী বুদ্ধকে দেখলেন। বুদ্ধকে দেখেই হস্তীরাজ স্বীয় নির্জনতার উপরোক্ত প্রীতিবাক্য বলেছিলেন। স্বয়ম্ভু শাক্যমুনি নিজের চিত্ত বিতর্ক এবং স্বচিত্তে হস্তীর চিত্ত বিতর্ক অবগত হয়ে উদানগাথা অর্থাৎ আনন্দ গাথা ভাষণ করলেন এভাবে-
“এতং নাগস্স নাগেন ঈসাদন্তস্স হত্থিনো
সমেতি চিত্তং চিত্তেন য়দেকো রমতী বনেতি।”
অনুবাদ:-
ঈষাদন্ত দীর্ঘদন্ত হস্তীনাগ সনে
( ঈষাদন্ত অর্থাৎ রথদন্ডের মত দীর্ঘ দন্ড বিশিষ্ট)
সম্বুদ্ধে মিলায় চিত্ত আপন জীবনে
যেহেতু উভয়ে রমে একা এই বনে।
হস্তী বুদ্ধের নিকট গিয়ে বুদ্ধকে বন্দনা করল। সেখানে অন্য কিছু দেখতে না পেয়ে ভদ্রশাল বৃক্ষের পাদদেশ পায়ের দ্বারা আঘাত করে সমান করে দিল। শুণ্ডের দ্বারা শাখা নিয়ে বৃক্ষতল পরিষ্কার করে দিল। এতদৃশ্য দর্শনে বুদ্ধ হস্তীকে বললেন, “হস্তীরাজ, তুমি একাকী অবস্থান করছ, আমিও একাকী অবস্থান করছি।” সে সময় হতে হস্তী ভগবানকে বিবিধ ভাবে সেবা পরিচর্য্যা করত। বুদ্ধ ভিক্ষান্ন সংগ্রহে যাবার সময় পাত্র নিয়ে আগু বাড়িয়ে দিত, আগমন কালেও আগু বাড়িয়ে নিয়ে আসত। বুদ্ধের মুখ ধোবার ও পান করার জল এনে দিত, বন হতে বিবিধ ফলমূল সংগ্রহ করে ভগবানকে দান দিত সশ্রদ্ধ চিত্তে।
এভাবে বুদ্ধ এবং হস্তীরাজ যখন অবস্থান করছিল সে সময় এক বানর হস্তী কর্তৃক বুদ্ধ পূজা দর্শন করল। বানর চিন্তা করল, “হস্তীও পশু আমিও পশু, হস্তী যদি বুদ্ধের সেবা করতে পারে, দান করতে পারে তবে আমি কেন পারব না? হস্তীর দান যেহেতু বুদ্ধ গ্রহণ করেন, অনুমোদন করেন, ভোজন করেন। আমার দানও নিশ্চয় মহাপুরুষ বুদ্ধ গ্রহণ করবেন, অনুমোদন করবেন, ভোজন করবেন।” তৎপর বানর বুদ্ধকে কি দান করবে তা ভেবে বনে বিচরণ পূর্বক কোন একদিন কোন এক বৃক্ষ দন্ডে মধু মক্ষিকা বিহীন এক মৌচাক দেখতে পেল। বানর অত্যন্ত আহ্লাদিত চিত্তে সেই দন্ডটি ভেংগে দন্ডসমেত মৌচাকটি তথাগতের নিকট নিয়ে আসল এবং একটি কদলীপত্র ছিঁড়ে মৌচাকটি দন্ডসমেত তথাগতকে প্রদান করলে তথাগত তা গ্রহণ করলেন। বুদ্ধ তা পরিভোগ করেন কিনা দেখার নিমিত্তে বানর সে স্থানেই দাঁড়িয়ে থাকল। বানর দেখল বুদ্ধ তা পরিভোগ করছেন না, শুধু হাতে নিয়েই বসে আছেন। এর কারণ কি তা জানার জন্য বানর মৌচাক দন্ডের প্রান্তভাগ নিয়ে মৌচাকটি উল্টালে দেখা গেল সেখানে কিছু মাছির ডিম। বানর শশব্যস্ত হয়ে ডিম গুলি বিদূরণ করে আবার বুদ্ধকে দিলে বুদ্ধ তা হতে মধু পান করলেন। মধুপান করতে দেখে বানর খুশিতে, আনন্দে আতœহারা হয়ে বৃক্ষ শাখা হতে বৃক্ষশাখায় লাফাতে লাগল। হঠাৎ অসাবধানতাবশতঃ বৃক্ষের শাখা ভেঙ্গে বানর মাটিতে পড়ে গাছের গোড়ায় আঘাত প্রাপ্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করল। বুদ্ধকে মধুদান এবং বুদ্ধের প্রতি প্রসন্নচিত্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করার পর বানর তাবতিংস স্বর্গে ত্রিশ যোজন বি¯তৃত কনক বিমান ও সহস্র অপ্সরা লাভ করল।
এদিকে ভিক্ষুরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে বর্ষাবাস শেষে তাঁরা বুদ্ধ সেবক ধর্মভান্ডাগারিক আনন্দকে নিয়ে বুদ্ধকে ফিরিয়ে নিয়ে যান। বুদ্ধ চলে যাবার পর হস্তীরাজও করুণাসিন্ধু বুদ্ধের বিরহ ব্যাথা সইতে না পেরে হৃৎপিন্ড বিদীর্ণ হয়ে মারা গিয়েছিল। কিন্তু শাস্তার প্রতি চিত্ত প্রসন্নতার দরুণ পারল্যেয় হস্তীও তাবতিংস স্বর্গে ত্রিশ যোজন বি¯তৃত সহস্র দেবকন্যার মধ্যে উৎপন্ন হয়েছিল। তার নাম হয়েছিল পারলেয়্য দেবপুত্র। বুদ্ধ পরশে এসে বুদ্ধ পূজা করে তির্যক যোনিজাত হস্তীরাজ ও বানর লাভ করেছিল উন্নত গতি। অহো! বুদ্ধ পূজার কি অপূর্ব ফল। কি অত্যাশ্চর্য মহিমা। তদ্বেতু সকলের উচিত শ্রদ্ধা চিত্তে বুদ্ধ তথা ত্রিরতেœর পূজা করা, অনুশীলন করা তথাগতের বিমুক্তি প্রদায়ী মহান সদ্ধর্মের। যাতে প্রাণে আসে শান্তি, নির্বাপিত হয় সমুদয় দুঃখ সন্তাপ, বন্ধ হয়ে যায় বারংবার আসা যাওয়ার দুঃখময় খেলা।
বৌদ্ধরা হস্তীর সেবা ও বানরের এই মধুদানকে কেন্দ্র করে ভাদ্র পূর্ণিমায় মধু পূর্ণিমা উদ্যাপন করে। এ দিনে বৌদ্ধগণ সকালে বিহারে গিয়ে বুদ্ধ পূজা, প্রদীপ পূজা, অষ্টশীল গ্রহণ, সংঘদান, সংঘসেবা ইত্যাদি বিবিধ পুণ্যকর্ম সম্পাদন করে। মধু পূর্ণিমার দিন বিকালে সকলে সমবেত হয়ে ছন্দবদ্ধ গাথায় বুদ্ধ প্রণতি জানায়, তৎপর সকলে শ্রদ্ধা ভরে বিভিন্ন ঔষধি বস্তু, যেমন পরীপাতা, বাসক পাতা, মধু, হরীতকী, বহেরা, আমলকী, বিবিধ উপাদেয় যুক্ত খাদ্য, আধুনিক কালের বিবিধ ঔষধ, বিভিন্ন দানীয় সামগ্রী ইত্যাদি দিয়ে বুদ্ধপূজা দেন এবং মাননীয় ভিক্ষুগণকে দান করেন। অষ্টশীলাদি গ্রহণ ও যথাসাধ্য প্রতিপালন করেন, ভৈষজ্য সংঘদানসমেত বিভিন্ন দানাদি পুণ্যকর্ম সম্পাদন করেন, যেগুলো অতীব কুশলময় কর্ম। মধু পূর্ণিমার পবিত্র প্রেক্ষাপটের মত সবার জীবন দান-শীল-ভাবনার অনূশীলনে পবিত্রতায় ভরে উঠুক, সবার মাঝে উৎপন্ন হোক সদ্ধর্মের বাতাবরণ, সকলেই হোক নির্বাণ রুপ পরম বিমুক্তির পথিক এই শুভেচ্ছায়,
মানবতা উথলে উঠুক সকল মানব অন্তরে
সব অকুশল দূর হয়ে যাক্ মৈত্রী-প্রেমের মন্তরে।
তথ্যঋণ:
মহাবর্গ- পণ্ডিত প্রজ্ঞানন্দ স্থবির
পালি-বাংলা অভিধান- মহাপণ্ডিত শান্তরক্ষিত মহাস্থবির
মহাপরিনিব্বান সুত্তং- রাজগুরু ধর্মরত্ন মহাস্থবির
by admin | Aug 26, 2019 | blog
Bhasu Vihara
written by – Labanaya Barua
Bhasu Vihara is known locally as Narapatir Dhap. It’s an important part of the Buddhist heritage of Bangladesh and there are remains here from several significant monastery buildings. is a complex of two rectangular monasteries and a semi-cruciform shrine of the Post-Gupta period. It is located at about 6 km west of Mahasthangarh on the northern part of village Bihar, under Bihar union of Shibganj upazila in Bogra district, about 500m west of the Nagar river.
During Cunningham’s tour, he identified this site six kilometers north-west of Mahasthangarh. Excavations have exposed two large Buddhist monasteries and a medium-sized Buddhist shrine. In 1970-80s further excavations revealed a small monastery consisting of 37 small rooms. Three of the five mounds of the site have been fully excavated. They have revealed two monasteries and a shrine from either the pre-Pala period or the post-Gupta period. The large monastery has an open space in the centre and rooms for the monks surrounding it. The smaller monastery has a similar layout, with a veranda at the front.
Reference
- Bogra: Vasu Bihar. (2019). Retrieved from https://www.alonelytraveler.com/2010/06/bogra-vasu-bihar.html
- (2019). Retrieved from http://en.banglapedia.org/index.php?title=Main_Page
- World Heritage Journeys Buddha. (2019). Retrieved from https://visitworldheritage.com/en/buddha
- Buddhist archaeological sites in Bangladesh | daily sun. (2019). Retrieved from https://www.daily-sun.com/printversion/details/307344/2018/05/08/Buddhist-archaeological-sites-in-Bangladesh
by admin | Aug 26, 2019 | blog
Mahasthangarh ( মহাস্থানগড় )
written by – Labanaya Barua
Mahasthangarh (মহাস্থানগড়) is one of the oldest and the most important buddhist archaeological attractions in Bangladesh. It is called the “oldest known city” of Bangladesh. Each of its bricks represents the history of ancient and medieval Bengal.
‘Mahasthan’ means ‘great sanctity’ and ‘garh’ means fort. So Mahasthangarh was named for its sacred fort. Mahasthan was first mentioned in a Sanskrit text of the 13th century entitled ‘Vallalcharita’. It was also mentioned in another book ‘Korotoa Mahatta’, circumstantially written in 12th–13th century.
Mahasthangarh is the remains of the ancient city of Pundranagar. It was the capital of the Maurya, Gupta and Sen kingdoms. This earliest and largest city, fortified by mud and red bricks, measures 1,525 metres long to north-south, 1,370 metres to east-west and 5 meters high from the soil level. Mahasthangarh is located in the Mahasthan village in Shibganj upazilla, 13 kilo metres north to Bogra town.
Mahasthangarh was declared as the cultural capital of the South Asian Association of Regional Cooperation (SAARC) on November 24, 2016, by a SAARC Cultural Centre team, led by its director Wasantha Kotuwella from Sri Lanka.
Reference
- (2019). Retrieved from http://en.banglapedia.org/index.php?title=Main_Page
- World Heritage Journeys Buddha. (2019). Retrieved from https://visitworldheritage.com/en/buddha
- Buddhist archaeological sites in Bangladesh | daily sun. (2019). Retrieved from https://www.daily-sun.com/printversion/details/307344/2018/05/08/Buddhist-archaeological-sites-in-Bangladesh
by admin | Aug 26, 2019 | blog
Mainamati Shalban Vihara ( ময়নামতি শালবন বিহার )
written by – Labanaya Barua
Shalban Vihara (শালবন বিহার) in Mainamati is one of the most important buddhist archaeological sites in Bangladesh. Shalban name which comes from a grove of shal (Shorea robusta) trees. The archaeological site is located about 10 km from Comilla city. It was built by King Bhava Deva in the 7th Century. In past, the monastery had the name as per the king of the locality. In that time, it was named Bhavadev Bihar.
In Shalban Vihara, it has the ground plan of a Buddhist monastery, there are four walls surrounding of Shalban Vihara with 115 monastic cells, in which the Buddhist monks studied and observed religious practices. Previously it was known as Shalban Rajar Bari. But after excavation ground plan of a Buddhist monastery measuring 550’x500′ with 115 monastic cells, it was exposed. Hence it is now popularly known as shalban vihara.
There was only one door in north side. There are many ancient ruins like- Charpatra Mura, Boiragir Mura, Kotila Mura, etc. Beside of the Moinamoti of which all are Buddhist Viharas or temples. Archaeologists have unearthed many things such as silver coins, copper-plates, jewelry etc. in Shalbon vihara. Many ancient artifacts like- ancient armors, copper-plates, coins, jewelries, bronze statues, burned clay-plates etc., found in Shalban Vihara. In Shalbon vihar a widest part, the ridge is about 4.5 km across and its highest peaks attain a height of about 45 meters. where the Northern part is called Moinamoti and the Southern part is called Lalmai; and Shalbon Bihar is in the Middle of Lalmai and Moinamoti, there are a series of hills.
The largest number of stone sculptures and terra-cotta plaques where been found in Comilla’s archaeological sites, representing Bengal and the sub-continent. Many items can be seen in the Mainamati site museum, which is the richest in artefacts amongst other museums in Bangladesh.
Reference
- Centre, U. (2019). UNESCO World Heritage Centre. Retrieved from https://whc.unesco.org/
- Visit Mainamati, B. (2019). Visit Mainamati, Lalmai and Shalbon Bihar, Comilla, Bangladesh. Retrieved from http://bdtourvisit.blogspot.com/2016/01/visit-mainamati-lalmai-and-shalbon.html
- (2019). Retrieved from http://en.banglapedia.org/index.php?title=Main_Page
- World Heritage Journeys Buddha. (2019). Retrieved from https://visitworldheritage.com/en/buddha
- Buddhist archaeological sites in Bangladesh | daily sun. (2019). Retrieved from https://www.daily-sun.com/printversion/details/307344/2018/05/08/Buddhist-archaeological-sites-in-Bangladesh
by admin | Aug 26, 2019 | blog
Paharpur Buddhist Monastery
written by – Labanaya Barua
Paharpur Buddhist Monastery, also known as Somopura Mahavihara (সোমপুর মহাবিহার) was a renowned intellectual center until the 12 the century. It is very important archaeological site in Bangladesh which is situated in Badalgachi Upazila under the present Naogaon district, near Rajshahi, northwestern Bangladesh. Paharpur Buddha Monastery can be called the world’s largest Buddhist temple. It was declared as a World Heritage site in 1985.
This area was named Sompur during Pala period. During this pala period, Sri Dharmapaldev (770-810AD), the second king of the Palais (Varendri-Magadha), built this monastery in the late 8th or early nineteenth century. In 1879 Sir Cunningham developed this great work.
The Paharpur Buddhist Monastery were developed for Buddhist religion’s high excellence in this pala period. In addition to various places in the Indian subcontinent, Buddhists of China, Tibet, Myanmar (earlier Burma), Malaysia, Indonesia, etc. used to come here to acquire religious knowledge. According to the history, Acharya (great scholar) Atish Dipankar lived for some time in Paharpur Buddhist monastery. His teacher Ratnakar Shamitya was the Mahasthabi (chief Pandit) of the Bihar. Ancient Carpenter Kanyapa and-and his guru, Jalandharan-pa, or Hari-Pa used to live here. After the end of the power of the Palas, this monastery became a ruin due to historical and geographical reasons.
It is a large square rectangle which is approximately 922 feet (270 meters) in north and 919 feet in the west and is composed of monks’ cells; the structure holds more than 177 rooms around the main temple. Each of these rooms is 14 feet long and 13 feet in width. The main wall of Bihar was found to be 20 feet wide. There are many smaller temples available in the enclosure. The central sanctuary has a solid ground plan which ascents in 3 terraces above ground level to a peak of 70 feet. The above-ground walls and ceilings have long been disintegrated. The area that was found intact was 280 meters in length and 278 meters wide.
The wondrous main temple is the unique architecture of the building industry. Extraordinary artistic planning. There are about 2 thousand terracotta plaques available in the wall of the temple.
It was dispersed in the anticipated reflection of the general public life of East Bengal. For example – people, hunters, dancing women, shepherds, plants, flowers, animals, elephants, horses and much more. The dramatic composition of beautiful cultural history is seen in the eyes of the eyes. Buddhist terra-cotta artwork and sacred Hindu sculptures are found in its base walls.
Reference
- Temple, A. (2019). Paharpur Bihar, Sompur Bihar. Retrieved from https://worldheritagebd.blogspot.com/2015/05/paharpur-bihar.html
- Centre, U. (2019). UNESCO World Heritage Centre. Retrieved from https://whc.unesco.org/
- (2019). Retrieved from http://en.banglapedia.org/index.php?title=Main_Page
- World Heritage Journeys Buddha. (2019). Retrieved from https://visitworldheritage.com/en/buddha
- Buddhist archaeological sites in Bangladesh | daily sun. (2019). Retrieved from https://www.daily-sun.com/printversion/details/307344/2018/05/08/Buddhist-archaeological-sites-in-Bangladesh
by admin | Aug 12, 2019 | blog
বুদ্ধের ধর্ম_মতে কর্ম ও কর্মফলের বিধান ও অঙ্গুলিমালের মুক্তিঃ
এস.জ্ঞানমিত্র ভিক্ষু, থাইল্যাণ্ড হতে
“যস্স পাপং কতং কম্মং কুসলেন পিধীযতি…. ” অর্থাৎ, পূর্বকৃত পাপকর্ম লোকোত্তর কুশল কর্ম দ্বারা আবৃত করা যায়। (থেরগাথা-পৃষ্টা ৪৩৪)
অঙ্গুলিমাল,(পিতা- গার্গ, মাতা মৈত্রায়নী) সুতরাং তিনি গার্গ-মৈত্রায়নীপুত্র নামেও অভিহিত। তিনি গুরুদক্ষিণা (১০০০ অঙ্গুলি দিয়ে গুরুপূজার জন্য) প্রদানের জন্য গুরুর অনৈতিক উপদেশে গুরুর প্রতি অন্ধভক্তি ভাবাপন্ন হয়ে বহুলোক হত্যা করেছিলেন (৯৯৯ জন মানুষ হত্যার কথা উল্লেখ নেই স্পষ্টভাবে, উল্লেখ আছে বহুলোক।)। তিনি শেষতম অঙ্গুলি সংগ্রহের জন্য বিচরণ করার সময় মাতাকে দেখে মাতৃহত্যা করে ১০০০ আঙ্গুল পূরণ করতে উদ্যত হন। এদিকে অঙ্গুলিমালের মার্গফল অর্জনের হেতু আছে জ্ঞাত হয়ে বুদ্ধ শ্রাবস্তীর জেতবন বিহার হতে অঙ্গুলিমালের নিকট শ্রাবস্তী হতে প্রায় ত্রিশযোজন দূরে (আচার্য বুদ্ধঘোষের মতে ১ যোজন=৭মাইল, সুতরাং ত্রিশ যোজন=২১০ মাইল, ১ মাইল = ১৭৬০ গজ) জালিনী বনে উপস্থিত হয়ে তাঁকে ঋদ্ধি প্রদর্শন ও উপদেশ প্রদান করে অঙ্গুলিমালের বোধ উৎপন্ন করে তাঁকে ভিক্ষুত্বে দীক্ষা প্রদান করেন। পরবর্তীতে তিনি অরহৎত্ব ফলে প্রতিষ্টিত হয়ে চির দুঃখের অবসান করেন। (থেরগাথা- ৪৩১-৪৩৩ পৃষ্ঠা)।
মাতাকে হত্যা উদ্যত হবার বিষয়টি ব্যতীত উপরিল্লিখিত বাকি বিষয়গুলো মধ্যম নিকায়ের ৮৬ নং সূত্র (দ্বিতীয় ভাগ-রাজবর্গ)-এ উল্লেখ আছে। মাতাকে হত্যা উদ্যত হবার বিষয়টি উল্লেখ না থাকার কারণ হিসেবে বলা চলে সূত্র কারোও জীবন কাহিনী বা আত্মকথন নয়। সূত্রটি কিভাবে অঙ্গুলিমাল পূর্বে প্রমত্ত থেকে শেষে অপ্রমত্ত হয়ে মার্গফল লাভ করেছিল তার উপদেশমূলক ব্যাখ্যা। আর থেরগাথা হলো থেরগণের আত্মকথন, থেরগণের জীবনীমূলক এবং তাদের মার্গফলের লাভের অনুভূতিমূলক আখ্যান।
ভিক্ষুত্বে দীক্ষা লাভের পর যখন অঙ্গুলিমাল স্থবির নগরে পিণ্ডপাতে বের হতেন তখন তাঁকে ঢিল, লাঠি ইত্যাদি ছুঁড়ে রক্তাক্ত করা হত। তিনি বিহারে ফিরলে বুদ্ধ তাঁকে বলতেন, তুমি সহ্য করো, তুমি যে পাপকর্ম করেছ, সেগুলোর ফলে অনেক হাজার বছর তোমাকে নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হতো। অথচ,তুমি -সেই কর্মফল ইহ জন্মেই ভোগ করে যাচ্ছ। (থেরগাথা- ৪৩৪ পৃষ্ঠা)।
তবে জিজ্ঞাসু ব্যক্তি প্রশ্ন করতেই পারে যে, যদি বৌদ্ধধর্মমতে কর্মের ফল ভোগ করতেই হয় আর অঙ্গুলিমাল যদি বহু মানুষ হত্যা করে তবে সেটার উপযুক্ত ফল কেন তিনি ভোগ করলেন না? এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য নিন্মোক্ত অনুচ্ছেদটি পড়তে অনুরোধ রইল।
#ফল_প্রদান_অনুসারে_কর্ম_চার_প্রকার:
জীবগণ জন্ম-জন্মান্তরে কুশলাকুশল বিবিধ কর্ম সম্পাদন করে। জীবের জন্মজন্মান্তরে কৃত বিবিধ কুশলাকুশল কর্মের মধ্যে বহু কর্ম বিরুদ্ধ কর্ম শক্তি দ্বারা প্রতিহত হয়, বহু কর্মশক্তি সংস্কাররূপে মন প্রবাহে সঞ্চিত থাকে। কিছু কর্মের ফলভোগ চলমান থাকে, আর কিছু কর্ম ফল প্রদানোন্মুখ থাকে। উক্ত সকল কর্মের মধ্যে যেই কর্মশক্তিসমূহ মৃত্যুক্ষণ বা জন্মক্ষণে ফল প্রদান করে সেগুলোকে চার ভাগে বিভক্ত করা হয়।
(১)গুরু কর্ম- এটি কুশল ও অকুশল দুই’ই হয়। কুশল গুরুকর্ম হলো অষ্টসমাপত্তি ধ্যান চিত্ত (চার রূপ ব্রহ্মলোক ও চার অরূপ ব্রহ্মলোকে উৎপন্ন হবার মতোন চিত্তের অবস্থা)। এই চিত্তধারীর মন বা চিত্ত কাম, ক্রোধ, আলস্য, অবসাদ, সন্দেহ, ঔদ্ধত্য, অনুতাপ সর্বতোভাবে চিত্ত হতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে এবং এগুলোর বিপরীত মনের অবস্থাকে জাগ্রত ও প্রতিষ্ঠিত করে।
অকুশল গুরুকর্ম হল পঞ্চ আনন্তরিক কর্ম, অর্থাৎ যেই কর্ম সম্পাদিত হলে অবশ্যই পরবর্তী জন্মে কর্মকর্তাকে নরকগামী হতে হয়। এই কর্মকে আনন্তরিক কর্ম বলার কারণ হলো এই অকুশল গুরুকর্ম সম্পাদন হলে এই কর্মের ফল প্রদান পরবর্তী জন্মেই হয় এর মধ্যে অন্য জন্মের ফাঁক নেই। এবং এটি মার্গ-ফলাদি লাভে অন্তরায়কর।
অকুশল গুরুকর্ম বা পঞ্চ আনন্তরিক কর্ম হল:
ক). মাতৃ হত্যা, খ). পিতৃ হত্যা, গ) .অরহৎহত্যা, ঘ).দ্বেষ চিত্তে বুদ্ধের পা হতে রক্তপাত ও ঙ). লোভ-দ্বেষ ও সম্মানের বশবর্তী হয়ে ভিক্ষু-সঙ্ঘের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি। এই কর্ম সম্পাদিত হলে স্রোতাপত্তি বা তদুর্দ্ধ মার্গ ও ফল লাভে অন্তরায় হয়।
এছাড়া, যিনি ভিক্ষুণী দূষণ করেন তারও সেই কর্ম মার্গ-ফলাদি লাভে অন্তরায় সৃষ্টি করে। (সাধনার অন্তরায়- জ্যোতিঃপাল মহাথের, পৃষ্টা-৪)।
(২)আসন্ন কর্ম- মৃত্যুর পূর্বক্ষণে ইহজীবনীক যেই অন্তিম কুশল বা অকুশল কর্মচেতনা জীবের মনে উৎপন্ন হয় ঠিক সেই কর্মচেতনা জীবকে পরবর্তী জন্মে জন্মধারণ করায়। (বিঃদ্রঃ- আমাদের জ্ঞাতিগণের তাই উচিৎ মুমূর্ষু ব্যক্তির সম্মুখে কান্নাকাটি বা হৈ-হুল্লোড় না করে মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তির অন্তরে কুশল চেতনা জাগ্রত হয় মতোন কার্য করা, যেমন- মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তির দ্বারা সম্পাদিত কুশল কর্ম স্মরণ করানো, সূত্রাদি শ্রবণ করানো প্রভৃতি।)
(৩) আচরিত কর্ম- জীব সারা জীবন ব্যাপী যেই সকল কর্মসমূহ বেশি বেশি করে করেছে সেই কর্মগুলোকে আচরিত কর্ম বলে। এইসকল কর্ম যদি অকুশল হয় তবে মৃত্যু মুহুর্তে জীবের চিত্তে অনুতাপ উৎপন্ন হয় এবং কুশল হলে প্রীতি উৎপন্ন হয়। উপরোক্ত গুরু কর্ম ও আসন্ন কর্মের অভাবে এই আচরিত কর্মই জীবের পরবর্তী জন্ম নির্ধারণ করে। তাই সকলের উচিৎ কুশল বা সৎ কর্ম বারংবার সম্পাদন করা। এবং অকুশল কর্ম সর্বভাবেই পরিত্যাগ করা। (ধর্মপদ, পাপবর্গ ১১৮-১১৯ গাথাদ্বয় দেখুন।)
(৪) উপচিত কর্ম- জীবগণ বর্তমান ও অতীত অতীত জন্মে অনেক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কর্ম করে যেগুলো বৃহৎ কর্মশক্তিদ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ঠিক পরবর্তী জন্মে ফল প্রদান করতে পারে না। কিন্তু এগুলো ক্ষুদ্র হলেও সংখ্যায় বেশি হবার দরুণ শক্তিশালী হয়ে গুরুকর্ম-আসন্নকর্ম-আচরিত কর্মের অভাবে এই উপচিত কর্মই পরবর্তী জীবনে ফল প্রদান করে।
উল্লেখ্য, গুরুকর্ম-আসন্নকর্ম-আচরিত কর্ম ঠিক পরবর্তী জীবনে একটির অভাবে অন্যটি ফল দেয়, এবং অকুশল গুরুকর্ম ছাড়া আসন্ন ও আচরিত কর্ম নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হলে ফল প্রদানের সামর্থ্য রাখে না। কিন্তু এই আচরিত কর্ম হতে নিষ্কৃতি পাওয়া অতীব দুষ্কর। বলা হয়েছে, জীব যে সকল কর্ম করে সেগুলোর অতি অল্পই বিরুদ্ধ কর্মশক্তিদ্বারা প্রতিহত হয় এবং এগুলো জীবের চিত্তপ্রবাহে প্রচ্ছন্ন থাকে। সুযোগ পেলেই ফল দেয়।
#_কৃত্যানুসারে_কর্ম_৪_প্রকার:
‘কর্ম’, কৃত্যানুসারে চার প্রকার, যেমন- (১)জনক কর্ম- যেটি অতীত অতীত কর্মের প্রভাবে বিভিন্ন কুশল-অকুশল কর্ম গঠন করে।
(২) উপস্তম্ভক বা সহকারী (উপকারী) কর্ম- এটি জনক কর্মকে সাহায্য করে। জনক কর্ম যদি কুশল কর্ম তৈরী করে তবে উপস্তম্ভক বা সহকারী কর্মটি সেই কুশল কর্ম বৃদ্ধিতে উপকার বা সাহায্য করে। জনক কর্ম অকুশল হলে উপস্তম্ভক বা সহকারী কর্মটি সেই অকুশল কর্ম বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
(৩) উৎপীড়ক কর্ম- অতীতের শক্তিশালী কর্মের দ্বারা এটি পূর্বোক্ত উপস্তম্ভক বা উপকারী কর্মের সাথে বিরোধ ঘটায়, বাধা দেয়, দুর্বল করে। যেমন, প্রখর রোদে কেউ ধান শুকোতে দিল বৃষ্টি এসে বাধা দিল, কোন ছাত্র পড়তে বসল কোনও বন্ধু এসে পড়তে সমস্যা সৃষ্টি করল। কারো ভাল মেধা আছে তবে আর্থিক কারণে পড়তে পারছে না। এখানে ধান শুকোনো, ছাত্রের পড়তে বসা, ছাত্রের মেধা হলো উপস্তম্ভক কর্ম আর বৃষ্টি, বন্ধুর দ্বারা ছাত্রের পড়ায় সমস্যা সৃষ্টি বা মেধাবী ছাত্রের আর্থিক অবস্থা হলো উৎপীড়ক কর্মশক্তি। উপস্তম্ভক কর্ম যদি কুশল হয় তবে এই উৎপীড়ক কর্মটি অকুশল হবে আর উপস্তম্ভক কর্ম অকুশল হলে উৎপীড়ক কর্মটি কুশল হবে।
(৪)উপঘাতক কর্ম- উপঘাতক কর্মও উৎপীড়ক কর্মের মতোন, তবে অধিক শক্তিশালী। উৎপীড়ক কর্ম শুধু বিরুদ্ধ কর্মকে বাধা দিয়ে ও দুর্বল করেই ক্ষান্ত হয়। তবে উপঘাতক কর্ম বিরুদ্ধ কর্মকে পুরোপুরি পরাজিত করে নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে। বিরুদ্ধ কর্ম অকুশল হলে উপঘাতক কর্ম সেটিকে পরাস্ত করে তা কুশলের দিকে নিয়ে যায়। পক্ষান্তরে বিরুদ্ধ কর্ম কুশল হলে উপঘাতক কর্ম সেটিকে পরাজিত করে অকুশলের দিকে নিয়ে যায়।
#ফলদানের_সময়_অনুসারে_চার_প্রকার_কর্ম–
(১) দৃষ্টধর্ম বেদনীয় কর্ম- এই কর্ম ইহজীবনেই ফল প্রদান করে। এই জাতীয় কর্মগুলো কুশল হোক বা অকুশল হোক, যদি সেগুলো অতি নিকৃষ্ট বা অতি উৎকৃষ্ট হয় তবে এ জন্মে ফল অবশ্যই ভোগতে হয়। কিন্তু, এই কর্মগুলো যদি ইহজীবনে কোনও কারণে বিরুদ্ধ কর্মশক্তিদ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ফল দিতে না পারে তবে আর কখনোই ফল প্রদান করতে পারে না; নিষ্ফলা বা বন্ধ্যা হয়ে যায়।
(২) উপপাদ্য বেদনীয় কর্ম- এই জাতীয় কর্মগুলো ঠিক পরবর্তী জন্মেই ফল দেয়। উপরোক্ত দৃষ্টধর্ম বেদনীয় কর্মের মতোন এই কর্ম যদি অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী বিরুদ্ধ কর্মশক্তি দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে পরবর্তী জন্মে ফল প্রদান করতে না পারে তবে তৃতীয় জন্ম হতে আর ফল প্রদান করতে পারে না। এই কর্ম যদি কোন ব্যক্তি একাধিক করে তবে একটিই ফলদায়ী হবে বাকিগুলো ব্যর্থ বা নিষ্ফলা হবে। যেমন, দেবদত্ত সঙ্ঘভেদ ও বুদ্ধপাদ হতে রক্তপাত জাতীয় দুটি গুরুকর্ম করলেও একটি ব্যর্থ হয়ে গেছে। আরো স্পষ্টভাবে বলতে গেলে কোন ব্যক্তি যদি ১০০টিও খুন করে তবে একবারই তার মৃত্যুদ- কার্যকর করা যায়।
(৩) অপরপর্যায় বেদনীয় কর্ম- জীবের তৃতীয় জন্ম হতে পূর্ণমুক্তি অর্থাৎ অরহত্ত্ব ফল লাভ করে নির্বাণ লাভ না করা অবধি এই কর্ম যখনই সুযোগ পায় তখনই ফল প্রদান করে। এ জাতীয় অকুশল কর্মকে উপলক্ষ্য করেই বুদ্ধ বলেছেন, আকাশ, সমুদ্র, পর্বতগুহা যে স্থানেই জীব অবস্থান করুক না কেন কর্মের ফল হতে নিস্তার নেই। (ধর্মপদ-পাপবর্গ-১২৭ নং গাথা)।
(৪) অহোসি কর্ম- যে সকল কুশল বা অকুশল কর্মগুলো বিরুদ্ধ কর্মশক্তি দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত বা দুর্বল হয়ে ফল প্রদান করতে না পেরে নিষ্ফলা হয়ে যায়, বন্ধ্যা হয়ে যায় সে সকল কর্ম সমূহকে অহোসি কর্ম বলে। ‘অহোসি’ শব্দের অর্থ হলো একদা ফল প্রদানের শক্তি ছিল কিন্তু কারণবশতঃ দুর্বল বা ফলহীন হয়ে গেছে। উল্লেখ্য, পূর্বোক্ত, অপরপর্যায় বেদনীয় কর্ম ও অকুশল গুরুকর্ম বাদে অন্যান্য কর্মগুলো যথাসময়ে ফল প্রদান করতে না পারলে ফলহীন বা নিষ্ফলা হয়ে যায়। এভাবে ১২ প্রকার ভাগে কর্মকে বিভাজিত করা হয়েছে।
অঙ্গুলিমাল যেহেতু পঞ্চ আনন্তরিক কর্ম করেন নি, তাই তিনি পূর্ব অরহত্ত্ব লাভের হেতু বশতঃ, বুদ্ধের সরাসরি উপদেশে, শক্তিশালী পারমীর গুণে ইহজীবনের কৃত অকুশল কর্মকে পরাজিত করেন এবং অরহত্ত্ব ফলে প্রতিষ্ঠিত হন। আর, অরহৎ-এর পুনর্জন্ম নেই, তদ্বেতু তিনি লঘু ফল ভোগ করেছিলেন। কর্মগুলো ফল পূর্ণাঙ্গরূপে দিতে না পেরে অনেকটাই অহোসি কর্মে পরিণত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু যদি অঙ্গুলিমাল মাতৃ হত্যা বা তৎজাতীয় অকুশল গুরুকর্ম করতো তবে তিনি অরহত্ত্ব ফল লাভ তো করতোই না বরঞ্চ নরক গমন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়তো।
উদাহরণ হিসেবে বলা চলে, মগধরাজ অজাতশত্রুর পূর্ব মার্গফল লাভের হেতু থাকা সত্ত্বেও পিতা বিম্বিসারকে হত্যার মত গুরু অকুশল কর্ম করায় তিনি ইহজীবনেই পুত্র উদায়িভদ্রের হাতে নিহত হয়ে দৃষ্টধর্মবেদনীয় কর্মফল যেমন ভোগ করেন তদ্রুপ গুরুকর্মের অবশ্যম্ভাবী ফলসরূপ মৃত্যুর মত নিরয়গামী হয়েছিলেন।
#সহায়ক_গ্রন্থ:
১. কর্মতত্ত্ব-শ্রী জ্যোতিঃপাল স্থবির, ২.থেরগাথা,
৩. ধর্মপদ, শ্রী ধর্মাধার মহাস্থবির, ৪. অজাতশত্রু- শ্রী শীলালংকার স্থবির।