গ্রামবাসীর সহযোগিতায় অগ্রসার বৌদ্ধ অনাথালয় উচ্চবিদ্যালয়ের ২০০১ ব্যাচ

গ্রামবাসীর সহযোগিতায় অগ্রসার বৌদ্ধ অনাথালয় উচ্চবিদ্যালয়ের ২০০১ ব্যাচ

আমরা করবো জয় নিশ্চয়ই

মহামারী করোনা ও লকডাউনে বিধস্ত গ্রামের গরীব দুঃখী মানুষ, ঠিক এই মূহুর্তে খাদ্য সংকটে থাকা গ্রামবাসীর সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে প্রিয় স্কুল অগ্রসার বৌদ্ধ অনাথালয় উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০১ ব্যাচের ছাত্র ছাত্রীবৃন্দ।
সম্ভাব্য আগামী ১ লা মে, ২০২০ ইং, রোজ শুক্রবার গ্রামবাসীর মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হবে।
আমি দেশে ও বিদেশে অবস্থানকারী ২০০১ এর সকল বন্ধুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং সাধ্যমত এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করছি।

২০০১ ব্যাচের বন্ধুরা সহযোগিতা পাঠাতে
Bkash (persenal) > 01883146061

যোগাযোগে
সুজন > 01883146061
রনি (নুনা দীঘির পাড়) > 01830091677

বুদ্ধত্ব প্রার্থনায় যে আটটি গুণ (অভিনীহার) অবশ্যই থাকা দরকার-ত্রিরত্ন ডট কম

বুদ্ধত্ব প্রার্থনায় যে আটটি গুণ (অভিনীহার) অবশ্যই থাকা দরকার-ত্রিরত্ন ডট কম

বুদ্ধত্ব প্রার্থনায় যে আটটি গুণ (অভিনীহার) অবশ্যই থাকা দরকার
__________________________________
লিখেছেনঃ জ্যোতিআর্য ভিক্ষু

পৃথিবীতে বহুকল্প পরে ১জন সম্যক সম্বুদ্ধ উৎপন্ন হন। যেমন আমরা অষ্টবিংশতি বন্দনায় ২৮জন বুদ্ধের সুদীর্ঘ পরিচয় পেয়ে থাকি। উক্ত সকল বুদ্ধগণ পৃথিবীবাসীর জন্য যে অপ্রমেয় ত্যাগ, তিতিক্ষা ও নির্বাণ প্রদায়ী ধর্ম দান দিয়ে যুগ থেকে যুগান্তরে আত্মমুক্তি ও পরকল্যাণে পরম ব্রতী হন সেই উদ্ভাসিত ময় জীবন লাভের জন্য স্বয়ং বুদ্ধও আমাদেরকে উৎসাহিত করেছেন। বুদ্ধ বলেন, “প্রাণের প্রিয় ভিক্ষু — ভিক্ষুণী, উপাসক — উপাসিকাগণ পৃথিবীতে সকল প্রাণী বুদ্ধ হওয়ার উপযুক্ত। যার জন্য প্রার্থীদের সাধনা করে এগিয়ে যেতে হবে।”

যেসকল বুদ্ধত্ব প্রার্থীগণ একজন বুদ্ধের কাজ থেকে পনিধান লাভ বা যারা বোধিসত্ত্ব হিসেবে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করেন তাদের ঐ মুহুর্তে ৮টি গুনে বা সম্পদে পরিপূর্ণ থাকতে হবে। ঐ সমস্ত গুণ পারমিতা ধর্মের প্রত্যয়ও বটে। আলোচ্যাংশে বিস্তারিত উপাস্থাপন করা হল:–

(১) “মনুস্সত্তং” —– যিনি বুদ্ধত্ব প্রার্থনা করবেন তাকে অবশ্যই মানুষ হয়ে জন্ম গ্রহণ করতে হবে। তাকে মনুষ্যত্ব ভাবে দাড়িয়ে বুদ্ধত্ব লাভ করবার জন্য প্রার্থনা করিলে সিদ্ধ হয়। নাগ, সুপর্ণ( পক্ষীকুল) তির্যক যোনিতে জন্ম গ্রহণ করিলে বুদ্ধ হইবার প্রার্থণা সিদ্ধ হয় না। তা বুদ্ধ হবার অনুপযুক্ত অবস্থা।

(২) “লিঙ্গ –সম্পত্তি” —- মনুষ্য- জন্ম লাভ করিলেও পুরুষ হইয়া জন্ম নিতে হয়। পন্ডক –নপুংসক ও উভয় ব্যঞ্জনকের বুদ্ধ হবার প্রার্থনা করলে সফল হয় না। তদ্ধেতু যথোক্তভাবের কারন সমূহ পরিপূর্ণ না থাকিলে প্রার্থনা করিতে পারে না। তাই কথিত হইয়াছে —-“হে ভিক্ষুগণ! ইহাই অনবকাশের অস্থান ও অসময়। নারী জাতি হইয়া বুদ্ধ হইবার প্রার্থনা পূর্ণ হয় না। তাই মানুষ জন্ম হইয়াও স্ত্রী লিঙ্গে থাকিয়া পন্ডকাদি অবস্থায়ও প্রার্থনা সফল হয় না।

(৩) “হেতূতি” —-উপনিশ্রয় সম্পদ। মনুষ্য জাতিতে জন্ম গ্রহণ হইলেও পুরুষত্বরূপ উপনিশ্রয় ও হেতু সম্পন্ন হয় হইয়া প্রার্থনা করিতে হয়; অন্য লিঙ্গ বিশেষের হয় না।

(৪) “সত্থার দস্সনন্তি” —— সম্যক সম্বুদ্ধের সম্মুখে প্রার্থনা করিতে হয়। জীবিত সম্যক সম্বুদ্ধের নিকট পুণ্য কাজ সম্পাদন করতঃ প্রার্থনা করিতে হয়। ভগবান বুদ্ধ পরিনির্বাপিত হইলে ভগবানের পূতাস্থি চৈত্যে, বোধিমূলে, বুদ্ধপ্রতিবিম্বের সম্মুখে, প্রত্যেক বুদ্ধ ও শ্রাবকগণের সামনে বুদ্ধ হইবার প্রার্থনা করিলে সফল হয় না। কেন? অধিকার দেওয়ার অভাবে। কারণ সম্যক সম্বুদ্ধগণই বুদ্ধ হইবার প্রার্থনাকারীকে অষ্টবিধ অভানীহার জ্ঞাত হইয়া কখন কত সুদীর্ঘ কল্পের পরে বুদ্ধ হইবেন সর্বজ্ঞাতা জ্ঞানে নিখুঁত জ্ঞাত হইয়া আর্শীবাদ ও অধিকার দিতে পারেন। ফলতঃ প্রার্থীর প্রার্থনা সফল না হইয়া বুদ্ধ মুখে দেওয়া অধিকার বিনষ্ঠ হইবার কোন সম্ভবনা থাকে না। যেমন রাজার লিখিত কোন নির্দেশ কোন ব্যক্তির কাছে থাকে তদ্বারা সে রাজকর্মে অধিকার যেমন পাইতে কোন বাধা থাকেনা। রাজআজ্ঞাই বলবৎ থাকে।

(৫) “পব্বজ্জাতি” —— ভগবান বুদ্ধের সম্মুখে বুদ্ধত্ব লাভের জন্য প্রার্থনা করিবার সময় ভিক্ষু বা কর্মবাদী (তাপস) সন্ন্যাসী হইতে হইবে। গৃহী অবস্থায় থাকিয়া প্রার্থনা করিলে সিদ্ধ হয় না। গৃহী অবস্থা বুদ্ধ হইবার প্রার্থনার অতি নিম্মতম স্তর। মহাবোধিসত্ত্ব যেমন গৃহী ছিলেন না। সুমেধ তাপস নামে প্রব্রজ্জিত থাকিয়া যথাভুত অধিষ্ঠানরূপ গুণ–সম্পদে গুণজ্ঞ ছিলেন।

(৬) “গুণসম্পত্তীতি” ——অভিজ্ঞারূপ গুণ — সম্পদ। আবার প্রব্রজিত হইলেও অষ্ঠ সমাপত্তি ধ্যান লাভ, অথবা পঞ্চাভিজ্ঞা ধ্যান লাভ করিতে হইবে। ঐ ধরণের গুণ–সম্পদ– লাভী না হইলে প্রার্থনা পূর্ণ হয় না। কেন? পারমিতা প্রবিচয়নে (অধিগত) অসমর্থ বা অক্ষমতা থাকা। উপনিশ্রয় সম্পদে ও অভিজ্ঞা সম্পদে অধিকারী হইয়া মহাপুরুষের কৃত্যাভিনীহার স্বয়ং পারমিতা ধর্মাদি প্রবিচয়ন করিতে সমর্থ হয়।

(৭) “অধিকারোতি”——-অধিকতর উপকারক। যথাযথ গুণ–সম্পত্তিতে সমন্বিত হইয়া যিনি নিজের জীবনকে বুদ্ধের উদ্দেশ্যে পরিত্যাগ করিয়া বুদ্ধ হইবার সংকল্প পরিপূর্ণ করিতে ইচ্ছুক হন—— তাহাই অধিকতর উপকারক ধর্ম বলিয়া বলা হয়েছে —তাঁহারই অভিনীহার সমৃদ্ধি সিদ্ধি লাভ করে।

(৮) “ছান্দাতি” ——- কুশল কর্ম সম্পাদন করিবার অধিকতর আগ্রহ, যিনি একান্তভাবে যথোক্ত ধর্মে সমন্বিত থাকিয়া বুদ্ধকারক ধর্মাদিতে পরমার্থ শক্তি অধিগত করিবার মহত্তম ছন্দ (অপরাজেয় ও অপশ্চাদগামী ইচ্ছা)। মহতী প্রার্থনা (বুদ্ধ না হওয়া যাবৎ বুদ্ধকারক কর্মচ্যুত না হওয়া) তাহার প্রার্থনা ধ্রুব পরিপূর্ণতা লাভ করে। (অর্থ্যাৎ বুদ্ধ হইতে পারেন)।
উদাহরণ:–১
সমস্ত চক্রবালে মহাপ্লাবনে জলময় জলাকার হইয়া পরিপূর্ণ হইলে কেহ যদি নিজের বাহুবলে সাঁতার কাটিয়া পরপারে উত্তীর্ণ হইয়া বুদ্ধ হইতে পারে বলিয়া শুনিতে পায় ——- সেইরূপ দুষ্কর কার্য নির্ভয়ে সম্পাদন করিতে অগ্রসর হন যিনি —– তাহাই ছন্দ বলা হইয়াছে।

উদাহরণ :–২
পুনশ্চ যদি সমস্ত চক্রবালেশিখা বিহীন, ধুঁয়া বিহীন প্রজ্জলিত পরিপূর্ণ থাকে —–সেই জ্বলন্ত অঙ্গারের উপর দিয়া যিনি হাটিয়া যাইতে নির্ভয়ে সাহস করেন, কোন দ্বিধাদ্বন্ধ করেন না —-তাহাই বলা হয় বুদ্ধত্ব লাভের ছন্দ।

পুনশ্চ সমস্ত চক্রবালময় সুতীক্ষ্ণ শক্তিশূল প্রোথিত করিয়া পরিপূর্ণ রাখিলে সেই তীক্ষ্ণ ধারাল শক্তিশূলের উপর পা রাখিয়া নিঃসঙ্কোচে নির্ভয়ে হাটিয়ে যাইতে সঙ্কল্প করেন—– তাহাই বলা হয় বুদ্ধত্ব লাভের ছন
পরিশেষে বলা যায় যে আমরা যারা সামাজিক জীবনে আড়ষ্ট হয়ে আছি আমাদেরও বুদ্ধত্ব লাভের জন্য প্রার্থনা করতে হলে উপরে ৮টি দূর্লভ গুণধর্মকে অনুশরণ করা বাচ্ঞনীয়। সাথে যেসকল গুণ বা অভনীহার আমাদের মধ্যে এখনো সৃষ্টি বা গঠন সেগুলো বৃদ্ধিতে আন্তরিক হবো।

সূত্র : প্রজ্ঞালোক মহাথের’রর পারমিতা গ্রন্থ

আপনালয়ে নিরাপদ থাকুন-ত্রিরত্ন ডট কম

আপনালয়ে নিরাপদ থাকুন-ত্রিরত্ন ডট কম

আপনালয়ে নিরাপদ থাকুন-ঝর্না বড়ুয়া

COVID-19

নোভেল করোনা ভাইরাস এক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অনুজীব | যা চীনের উহান শহর থেকে উৎপত্তি হয়ে আজ বিশ্বে মানব সভ্যতাকে স্থবির করে দিয়েছে| পুরো বিশ্বকে একপ্রকার ধরাশায়ী করে তুলেছে|| বিশ্বনেতারা আজ পরাজিত, ক্ষমতাবান ছোট্ট ভাইরাসের কাছে | প্রথমে দেখা যায় না, ছোঁয়া যায় না , অনুভব করা যায় না কিন্ত হাজার হাজার মানবের প্রাণ কেড়ে নিল| চিন্তা করলে কি এক মহা আশ্চর্য্য!আজ পুরো বিশ্বে প্রতিটি ক্ষণে এক অজানা আতংক ও উৎকন্ঠা বিরাজ করছে | প্লেটো, এরিস্টটল, সক্রেটিস, আলেকজান্ডার, আল বেরুনী, ইবনে সিনা, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল মতো মনীষাদের জন্ম যে দেশগুলোতে আজ সেসব দেশ মৃত্যুপুরিতে পরিণত হয়েছে।। সভ্যতা, জ্ঞান বিজ্ঞানে ও প্রাচুর্যে ভরপুর রাস্ট্রসমূহ ইতালি, ইরান, গ্রীস, ফ্রান্স, স্পেন, রাজকীয় দেশ ইংল্যান্ড , জার্মানি, চীন,সুইজারল্যান্ড ও মহাপ্রভাবশালী খ্যাত আমেরিকাও বাদ পড়েনি। যে ইউরোপে সাহিত্য , দর্শন , চিত্রশিল্প , ভাস্কর্য, চিকিৎসা বিজ্ঞান, রাষ্ট্র ও সমাজ চেতনায় বৈজ্ঞানিক মনোবৃত্তির উন্মেষ ঘটায় বিশেষ করে ইতালি তাদের মধ্যে অন্যতম। যে রেনেসাঁ ইউরোপে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল গতানুগতিক সব বন্ধন ছেদ করে মানবতাবাদ, ধর্ম নিরপেক্ষতার চেতনা ও সাম্যের সৃস্টি করেছিল তা আজ করোনার কাছে বিপযর্স্ত। তদ্রুপ পৃথিবীর ইতিহাসে আজ অবধি যতগুলো বৃহৎ এবং প্রভাবশালী সাম্রাজ্যের সৃস্টি তন্মধ্যে পারস্য সাম্রাজ্য বর্তমান ইরান প্রথমসারির । সম্রাট সাইরাস দ্য গ্রেটের হাতে উৎপত্তি লাভ করা এই সাম্রাজ্যটিই পৃথিবীর প্রথম পরাশক্তি। ভৌগলিক অবস্থান, উন্নত শাসনব্যবস্থা, শিল্প-সংস্কৃতি, স্থাপত্যকলা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি প্রভৃতি নিয়ামক এর পরাশক্তি হওয়া সত্বেও আজ অসহায়ত্ব প্রমানিত। ইউরোপ মহাদেশ থেকে আগত স্পেনীয়, পতুর্গীজ, ইংরেজ, জার্মান, ইটালিয়ান সবার সম্মিলিত কৃষ্টি সভ্যতার সমন্বয়ে আধুনিক আমেরিকার সৃস্টি।। গবেষণা, জ্ঞান বিজ্ঞানে, উন্নত চিকিৎসার শাস্ত্রে, ক্ষমতাধর রাস্ট্র হিসাব নম্বর ওয়ান হলেও করোনাে ভাইরাসের কাছে হেরে গেল নাম্বার ওয়ান হিসাবে। যাহোক কানাডার ফাস্ট লেডি, স্পেনের রানী, ইংল্যান্ডর প্রধানমন্ত্রী, রানী এলিজাবেথ, প্রিন্স চার্লস, টম হ্যাংকস, সৌদি রাজ পরিবার, বহু নামকরা চিকিৎসক , স্বাস্থ্যকর্মীরা কেউ বাদ পড়েনি এর হাত থেকে। এবার আসি আমার প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতায়, আমার ব্যক্তিগত ধারণা ছিল আমেরিকায় প্রতিটি নাগরিক কে সুরক্ষা দিবে রাষ্ট্র কিন্তু তা ভুল প্রমাণিত হলো এযাত্রায়।যখন উহান শহরে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে তখন আমেরিকা সমবেদনা নিয়ে ব্যস্ত তখন যদি উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হতো তাহলে আজ আমেরিকা মৃত্যুপুরিতে পরিণত হতো না। সেদিক থেকে আমার প্রিয় নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কে আন্তরিক অভিনন্দন শ্রদ্ধা ও স্যালুট জানাই। প্রভাবশালী দেশের রাস্ট্র নায়কদের আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন কিভাবে সম্পদের স্বল্পতা সত্বেও একজন মানবতাবাদী লিডার কিভাবে এরূপ কঠিন সময়ে দৃঢ়তার সাথে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারে। এ ভাইরাস বুঝিয়ে দিয়েছে আমাদের জীবন খুবই ক্ষুদ্র, ধনী গরীব, ভৌগোলিক সীমারেখা, গাড়ি, বাড়ি, সম্পদ, অর্থবিত্ত, অহংকার, ক্ষমতার দম্ভ, যশ খ্যাতি, প্রাচুর্য সবকিছু অনিত্য। মানুষে মানুষে হানাহানি, যুদ্ধ-বিগ্রহ, লোভ, দ্বেষ, মোহ সবকিছু নশ্বর। সবার সুপ্ত মানবিকতাকে জাগিয়ে দিয়েছে নীরবে। বয়স্কদের প্রতি যত্নশীল হওয়া, পরিবারকে সময় দেওয়া, শিশুদের পাশে থাকা, প্রতিবেশীদের প্রতি মমত্ববোধ বাড়ানো, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা, ব্যায়াম করা, পরিমিত ঘুমানো, মেধা ও মননের চর্চা করা সর্বোপরি প্রকৃতিকে আপন করে ভালবাসা। যাহোক এ ভাইরাস থেকে মুক্ত হতে হলে সবাইকে সরকার ও প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া নিয়মাবলী নিজে মানবো অপরকে মানতে সহযোগিতা করবো। নিজেও বাঁচবো অপরকেও বাঁচাবো এ ব্রতী নিয়ে চলতে হবে। মানুষে মানুষে মমত্ববোধ নিয়ে চলবো। ভালবাসবো সবাইকে প্রান দিয়ে। উপকার করতে না পারলেও ক্ষতি করবো না এ মনোভাব জাগ্রত করতে হবে। এ ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য, হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু থেকে শিক্ষা নিয়ে, মাস্ক পড়বো নিয়মিত, হ্যান্ড গ্লোবস পড়বো, অকারনে বাইরে যাব না, হাত ধোব বিশ সেকেন্ড করে। আর সবসময় গরম জাতির খাবার চা, কফি, স্যুপ খাব। গরম পানিতে লেবুর রস, আদা,লবঙ্গ, কালোজিরে, রসুন, গোলমরিচ ও সরিষার তৈল দিয়ে সিদ্ধ করে স্যুপের মত খাবো। বেশী পানি পান করা| জ্বর, কাশি, গলা ব্যাথা ও শ্বাষ কষ্ট হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিবো| হোম কোয়ারেন্টিন, আইসোলেশন, লকডাউন এবং সামাজিক দুরত্ব মেনে চলবো সবসময়| কি আর্তনাদ সারা পৃথিবীতে ! আপন মানুষের ভালবাসা থেকে বিচ্ছিন্ন সবার। কেউ কারো কাছে যেতে পাচ্ছে না। তাই সবার হৃদয় দিয়ে অনুভব করে আপনালয়ে সুস্থ শরীরে আরও কিছুদিন নিরাপদে ও নিরাময়ে অবস্থান করুন~ এ আমার মনের আকুল আবেদন, আমার প্রিয় মাতৃভূমির প্রিয়দেশবাসীর কাছে। ভালবাসি লাল সবুজের দেশ আমার প্রিয় বাংলাদেশ।। পরিশেষে রোমান কবিতার সেই অংশ “একই আকাশ, সূর্য আর চাঁদের আলোর নীচে আমাদের বসবাস দিন শেষে আমরা তো একই সাগরের ঢেউ”||

ঝর্না বড়ুয়া

লং বীচ, ক্যালিফোর্নিয়া

তারিখ এপ্রিল ২৩, ২০২০

কালী যক্ষিণী ও গৌতম বুদ্ধ – ত্রিরত্ন ডট কম

কালী যক্ষিণী ও গৌতম বুদ্ধ – ত্রিরত্ন ডট কম

বুদ্ধের সময়ে শ্রাবস্তী নগরে এক ব্যাক্তি পিতার মৃত্যুর পর সংসারের যাবতীয় কার্য ভার বহন করে তার মায়ের সেবা করতে লাগলো। তার মা একটি বড় পরিবার থেকে তার ছেলেকে বিয়ে করাল। বেশ ধুমদাম করে ছেলের বিয়ে করাল মা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তাদের সংসারে কোন সন্তনাদি না হওয়ায় মা তার ছেলেকে আরেকটি বিবাহ করাল। কিন্তু ছেলেটির প্রথমা স্ত্রী এ বিয়েতে রাজি ছিল না। এদিকে নতুন ছেলেটির নতুন বউ অন্তঃসত্বা হল। ফলে তাদের পরিবারে আনন্দের মাখামাখি হতে লাগলো। কিন্তু প্রথমা স্ত্রী সেটা সহ্য করতে পারছিল না, তখন প্রথমা স্ত্রী কৌশলে ঔষধ প্রয়োগ করে গর্ভপাত ঘটালো। এভাবে দ্বিতীয় বারও এরূপ ভাবে গর্ভপাত ঘটালো। তৃতীয় বার গর্ভপাত ঘটানোর সময় দ্বিতীয় স্ত্রী মারা গেল। আর মারা যাবার সময় সে সতিনীর প্রতি প্রতিশোধ পরায়ণা হয়ে মারা গেল। এবং সেই গৃহে বিড়ালী হয়ে জন্ম গ্রহন করল। তখন ঐ বাড়িতে মুরগী ডিম পারলেই বিড়ালী এসে খেয়ে ফেলত। এভাবে কয়েকবার ডিম খেয়ে ফেলাতে মুরগী মরবার সময় ঐ বিড়ালীকে তার সন্তানাদি সহ খাওয়ার সংকল্প নিয়ে প্রাণ ত্যাগ করে পরের জন্মে এক চিতা বাঘিনী হয়ে জন্মগ্রহন করল। এদিকে বিড়ালী যতাসময়ে মরার পর হরিণী হয়ে জন্মলাভ করে। তারা দুইজনে একি বনে বাস করতে লাগলো।
হরিণী হয়ে জন্মলাভ করে। তারা দুইজনে একি বনে বাস করতে লাগলো।
অতঃপর হরিণী বাচ্চা প্রসব করলেই বাঘিনী এসে খেয়ে ফেলে। এভাবে বাচ্চা দুইয়েকবার খাওয়াতে হরিণী মৃত্যুর সময় একি সংকল্প বদ্ধ হয়ে মারা গেলে এক যক্ষিণী রূপে জন্মগ্রহন করল। এবং একি সাথে বাঘিনী মারা গিয়ে শ্রাবস্তীর একই গ্রামে জন্মগ্রহন করে। বাঘিনী এ জন্মে একটি পরিবারে কন্যা হিসেবে জন্মগ্রহন করে। যথাসময়ে কন্যার বিবাহ হল। বিবাহের পর তার ঘরে সন্তান জন্মগ্রহন করলে, যক্ষিণী প্রিয় সখীরূপে এসে শিশুকে খেয়ে ফেলে। দ্বিতীয় বারও ঠিক এরূপ ঘটনা। তৃতীয়বার অন্তসত্বা হবার পর তার স্বামীকে যক্ষিনীর ভয়ে বলতে লাগলো- এবার আমি চাই আমার নতুন সন্তান আমার বাপের বাড়ীতে জন্মহোক। এখানে থাকলে ঐ যক্ষিণী আামার ছেলেকে খেয়ে ফেলবে। স্ত্রী ও সন্তানের কথা চিন্তা করে তার স্বামী যথাসময়ে তার স্ত্রীকে বাপের বাড়ীতে যাওয়ার ব্যাবস্তা করল।
বাপের বাড়ীতে গিয়ে যথাসময়ে নিরাপদে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করল। নিরাপদে সন্তান প্রসব হওয়াতে খুব ধুমদাম ভাবে ছেলে শিশুর নামকরন সম্পাদন করল। অতঃপর একদিন স্বামী স্ত্রী সন্তান নিয়ে তাদের বাড়ীতে ফিলতে ছিল। এই দিকে যক্ষিণী পূর্বস্থানে স্ত্রীলোককে দেখতে না পেয়ে তার সন্ধানে পাগলের মত খুঁজতে লাগল। হঠাৎ পথের মাঝখানে তাদের সাথে দেখা হয়ে গেল। যক্ষিণীকে দেখে স্ত্রী লোকটি ভয়ে চীৎকার করে উঠল এবং পুত্রের প্রাণ রক্ষাত্বে বক্ষে ধারণ করে দৌড়াতে লাগলো। দৌড়াতে দৌড়াতে নিকটবর্তী শ্রাবস্তীর জেতবন বিহারে প্রবেশ করল। ভগবান তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধ তখন ধর্ম সভায় মানুষকে ধর্ম দেশনা করতে ছিলেন। স্ত্রী লোকটি দেরি না করে তার কোলের অবুজ সন্তানটিকে বুদ্ধের চরণ তলে স্থাপন করে যক্ষিণীর হাত থেকে পুত্রের প্রাণ ভিক্ষা চাইলেন যক্ষিণীও পিছনে পিছনে এসে জেতবনে উপস্থিত হল। ভগবান বুদ্ধকে দেখে কিছুটা সংযত পুর্বক দাড়িয়ে রইলো। যক্ষিণীর মনোভাব বুঝতে পেরে ভগবান বুদ্ধ দুইজনকে তাদের অতীত জন্মের শক্রতার কথা বর্ণনা করতে লাগলেন। এবং দেশনার এক পর্যায়ে উভয়ের উদ্দেশ্যে বলতে লাগলেন-

” নহি বেরেন বেরানি সম্মন্তী’ধ কুদাচনং,
অবেরেণ চ সম্মন্তি, এস ধম্মো সনন্তনো”। ৫ (ধম্মপদ)

” এ জগতে শক্রতার দ্বারা কখনো শক্রতার উপশন হয় না, মিত্রতার দ্বারাই শক্রতার উপশম হয় “

বুদ্ধের এই চিত্ত বিধারিত বাণী শুনার পর যক্ষিনী ও স্ত্রীলোকটি সৎ জ্ঞান লাভ করে। এবং চিরতরে পরস্পর পরস্পরের শক্রতার উপশম ঘটাল।

সুত্রঃ সংগৃহীত

শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহার,মিরপুর–ত্রিরত্ন ডট কম

শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহার,মিরপুর–ত্রিরত্ন ডট কম

রাজধানী ঢাকার শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারের অবস্থান মিরপুর-১৩, ঢাকা-১২১৬। বাংলাদেশের প্রখ্যাত বিদ্যায়তন ‘স্কলাস্টিকা’, ও হারম্যান মেইনার স্কুল এন্ড কলেজের পাশে বাংলাদেশ রোড ট্রন্সপোর্ট অটরিটির বিপরীতে ১০ নং মিরপুর গোলচত্তর থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গমনাগমণের বড় রাস্তার সাথে সংযুক্ত, ১০ নং সেকশনে অবস্থিত ‘বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ’কে বুকে ধারণ করে তিন পার্বত্য জেলার তাবৎ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠির একমাত্র বৌদ্ধ মন্দির ‘শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারের অবস্থান। এ বৌদ্ধ বিহারটি প্রতিষ্ঠা করে পার্বত্য বৌদ্ধ সংঘ। ঠিকানা শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহার, প্লট-৪, ব্লক-এ (আহসানউল্লাহ | রোড-১) মিরপুর-১৩, ঢাকা- ১২১৬।

এ বৌদ্ধ প্যাগোডা বা মন্দিরটির স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন ভদন্ত বিমল তিষ্য ভিক্ষু মহােদয়। আজ থেকে ৪৪ চুয়াল্লিশ) বছর আগের কথা। ঢাকা শহরের বুকে সমতল ও আদিবাসী বৌদ্ধদের নিত্য নৈমিত্তিক পূর্জাচনা, প্রার্থনা, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান প্রতিপালনের জন্য একটিমাত্র বৌদ্ধ মন্দির অবস্থিত ছিল। সেটি হল কমলাপুর ধর্মরাজিকা বৌদ্ধ মহাবিহার।

(১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ সাল)দীর্ঘ আটটি বছরের ক্লান্তিহীন সাধনায় বৌদ্ধ আদিবাসী জনগোষ্ঠির জন্যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বুকে একটি স্থায়ী ঠিকানা নির্ধারণ করে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।১৯৮৩ সালের ২৭ ফ্রেব্রুয়ারি শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন । ১৯৮৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শুরু হয় ।

১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ ফেব্রুয়ারী ৩২ জন অনাথ, অসহায়, ছিন্নমূল ও হতদরিদ্র আদিবাসী বালক ও ৩২ জন বালিকাকে নিয়ে ‘বনফুল চিলড্রেন্স হোমস এর কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।উল্লেখ্য এই বনফুল কমপ্লেক্স এর নির্মাণ কাজ ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত চলে। পরে ২০১৫ সালের ৪ নভেম্বর বুধবার শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারের বর্তমান অনিন্দ্যসুন্দর দাঁড়ানো বুদ্ধ প্রতিমূর্তিটি মৃনাল হক মহোদয় কর্তৃক দাঁড় করানোর কাজটি সুসম্পন্ন করেন।

আনন্দময় পাঠদানের জন্য সুন্দর শ্রেণিশিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম গুরুত্ববহ। এরূপ বিবেচনায় বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজের খোলামেলা সবুজ চত্বরে শিক্ষার্থীদের ক্লাসপূর্ব প্রাত্যহিক অ্যাসেম্বলি হয়ে থাকে। আদিবাসী কলেজে রয়েছে বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন ক্লাব, যাতে শিক্ষার্থীরা নানাভাবে মেধা যাচাইয়ের সুযোগ পায়। বার্ষিক খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পুরস্কার বিতরণ, বিভিন্ন মেলার আয়োজন এবং প্রতিটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উদ্যাপনকালীন নানা আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহশিক্ষা কার্যক্রমের সুযোগ পায়। শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা প্রসারের জন্য প্রতিবছর শিক্ষণীয় স্টাডি ট্যুরের আয়োজন করা হয়।

সুত্রঃ ভদন্ত প্রজ্ঞানন্দ মহাথের ভান্তের এর লিখা তথাগত অনলাইন থেকে সংগৃহীত ।

error: Content is protected !!