বুদ্ধের ধর্ম_মতে কর্ম ও কর্মফলের বিধান ও অঙ্গুলিমালের মুক্তিঃ
এস.জ্ঞানমিত্র ভিক্ষু, থাইল্যাণ্ড হতে
“যস্স পাপং কতং কম্মং কুসলেন পিধীযতি…. ” অর্থাৎ, পূর্বকৃত পাপকর্ম লোকোত্তর কুশল কর্ম দ্বারা আবৃত করা যায়। (থেরগাথা-পৃষ্টা ৪৩৪)
অঙ্গুলিমাল,(পিতা- গার্গ, মাতা মৈত্রায়নী) সুতরাং তিনি গার্গ-মৈত্রায়নীপুত্র নামেও অভিহিত। তিনি গুরুদক্ষিণা (১০০০ অঙ্গুলি দিয়ে গুরুপূজার জন্য) প্রদানের জন্য গুরুর অনৈতিক উপদেশে গুরুর প্রতি অন্ধভক্তি ভাবাপন্ন হয়ে বহুলোক হত্যা করেছিলেন (৯৯৯ জন মানুষ হত্যার কথা উল্লেখ নেই স্পষ্টভাবে, উল্লেখ আছে বহুলোক।)। তিনি শেষতম অঙ্গুলি সংগ্রহের জন্য বিচরণ করার সময় মাতাকে দেখে মাতৃহত্যা করে ১০০০ আঙ্গুল পূরণ করতে উদ্যত হন। এদিকে অঙ্গুলিমালের মার্গফল অর্জনের হেতু আছে জ্ঞাত হয়ে বুদ্ধ শ্রাবস্তীর জেতবন বিহার হতে অঙ্গুলিমালের নিকট শ্রাবস্তী হতে প্রায় ত্রিশযোজন দূরে (আচার্য বুদ্ধঘোষের মতে ১ যোজন=৭মাইল, সুতরাং ত্রিশ যোজন=২১০ মাইল, ১ মাইল = ১৭৬০ গজ) জালিনী বনে উপস্থিত হয়ে তাঁকে ঋদ্ধি প্রদর্শন ও উপদেশ প্রদান করে অঙ্গুলিমালের বোধ উৎপন্ন করে তাঁকে ভিক্ষুত্বে দীক্ষা প্রদান করেন। পরবর্তীতে তিনি অরহৎত্ব ফলে প্রতিষ্টিত হয়ে চির দুঃখের অবসান করেন। (থেরগাথা- ৪৩১-৪৩৩ পৃষ্ঠা)।
মাতাকে হত্যা উদ্যত হবার বিষয়টি ব্যতীত উপরিল্লিখিত বাকি বিষয়গুলো মধ্যম নিকায়ের ৮৬ নং সূত্র (দ্বিতীয় ভাগ-রাজবর্গ)-এ উল্লেখ আছে। মাতাকে হত্যা উদ্যত হবার বিষয়টি উল্লেখ না থাকার কারণ হিসেবে বলা চলে সূত্র কারোও জীবন কাহিনী বা আত্মকথন নয়। সূত্রটি কিভাবে অঙ্গুলিমাল পূর্বে প্রমত্ত থেকে শেষে অপ্রমত্ত হয়ে মার্গফল লাভ করেছিল তার উপদেশমূলক ব্যাখ্যা। আর থেরগাথা হলো থেরগণের আত্মকথন, থেরগণের জীবনীমূলক এবং তাদের মার্গফলের লাভের অনুভূতিমূলক আখ্যান।
ভিক্ষুত্বে দীক্ষা লাভের পর যখন অঙ্গুলিমাল স্থবির নগরে পিণ্ডপাতে বের হতেন তখন তাঁকে ঢিল, লাঠি ইত্যাদি ছুঁড়ে রক্তাক্ত করা হত। তিনি বিহারে ফিরলে বুদ্ধ তাঁকে বলতেন, তুমি সহ্য করো, তুমি যে পাপকর্ম করেছ, সেগুলোর ফলে অনেক হাজার বছর তোমাকে নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হতো। অথচ,তুমি -সেই কর্মফল ইহ জন্মেই ভোগ করে যাচ্ছ। (থেরগাথা- ৪৩৪ পৃষ্ঠা)।
তবে জিজ্ঞাসু ব্যক্তি প্রশ্ন করতেই পারে যে, যদি বৌদ্ধধর্মমতে কর্মের ফল ভোগ করতেই হয় আর অঙ্গুলিমাল যদি বহু মানুষ হত্যা করে তবে সেটার উপযুক্ত ফল কেন তিনি ভোগ করলেন না? এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য নিন্মোক্ত অনুচ্ছেদটি পড়তে অনুরোধ রইল।
#ফল_প্রদান_অনুসারে_কর্ম_চার_প্রকার:
জীবগণ জন্ম-জন্মান্তরে কুশলাকুশল বিবিধ কর্ম সম্পাদন করে। জীবের জন্মজন্মান্তরে কৃত বিবিধ কুশলাকুশল কর্মের মধ্যে বহু কর্ম বিরুদ্ধ কর্ম শক্তি দ্বারা প্রতিহত হয়, বহু কর্মশক্তি সংস্কাররূপে মন প্রবাহে সঞ্চিত থাকে। কিছু কর্মের ফলভোগ চলমান থাকে, আর কিছু কর্ম ফল প্রদানোন্মুখ থাকে। উক্ত সকল কর্মের মধ্যে যেই কর্মশক্তিসমূহ মৃত্যুক্ষণ বা জন্মক্ষণে ফল প্রদান করে সেগুলোকে চার ভাগে বিভক্ত করা হয়।
(১)গুরু কর্ম- এটি কুশল ও অকুশল দুই’ই হয়। কুশল গুরুকর্ম হলো অষ্টসমাপত্তি ধ্যান চিত্ত (চার রূপ ব্রহ্মলোক ও চার অরূপ ব্রহ্মলোকে উৎপন্ন হবার মতোন চিত্তের অবস্থা)। এই চিত্তধারীর মন বা চিত্ত কাম, ক্রোধ, আলস্য, অবসাদ, সন্দেহ, ঔদ্ধত্য, অনুতাপ সর্বতোভাবে চিত্ত হতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে এবং এগুলোর বিপরীত মনের অবস্থাকে জাগ্রত ও প্রতিষ্ঠিত করে।
অকুশল গুরুকর্ম হল পঞ্চ আনন্তরিক কর্ম, অর্থাৎ যেই কর্ম সম্পাদিত হলে অবশ্যই পরবর্তী জন্মে কর্মকর্তাকে নরকগামী হতে হয়। এই কর্মকে আনন্তরিক কর্ম বলার কারণ হলো এই অকুশল গুরুকর্ম সম্পাদন হলে এই কর্মের ফল প্রদান পরবর্তী জন্মেই হয় এর মধ্যে অন্য জন্মের ফাঁক নেই। এবং এটি মার্গ-ফলাদি লাভে অন্তরায়কর।
অকুশল গুরুকর্ম বা পঞ্চ আনন্তরিক কর্ম হল:
ক). মাতৃ হত্যা, খ). পিতৃ হত্যা, গ) .অরহৎহত্যা, ঘ).দ্বেষ চিত্তে বুদ্ধের পা হতে রক্তপাত ও ঙ). লোভ-দ্বেষ ও সম্মানের বশবর্তী হয়ে ভিক্ষু-সঙ্ঘের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি। এই কর্ম সম্পাদিত হলে স্রোতাপত্তি বা তদুর্দ্ধ মার্গ ও ফল লাভে অন্তরায় হয়।
এছাড়া, যিনি ভিক্ষুণী দূষণ করেন তারও সেই কর্ম মার্গ-ফলাদি লাভে অন্তরায় সৃষ্টি করে। (সাধনার অন্তরায়- জ্যোতিঃপাল মহাথের, পৃষ্টা-৪)।
(২)আসন্ন কর্ম- মৃত্যুর পূর্বক্ষণে ইহজীবনীক যেই অন্তিম কুশল বা অকুশল কর্মচেতনা জীবের মনে উৎপন্ন হয় ঠিক সেই কর্মচেতনা জীবকে পরবর্তী জন্মে জন্মধারণ করায়। (বিঃদ্রঃ- আমাদের জ্ঞাতিগণের তাই উচিৎ মুমূর্ষু ব্যক্তির সম্মুখে কান্নাকাটি বা হৈ-হুল্লোড় না করে মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তির অন্তরে কুশল চেতনা জাগ্রত হয় মতোন কার্য করা, যেমন- মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তির দ্বারা সম্পাদিত কুশল কর্ম স্মরণ করানো, সূত্রাদি শ্রবণ করানো প্রভৃতি।)
(৩) আচরিত কর্ম- জীব সারা জীবন ব্যাপী যেই সকল কর্মসমূহ বেশি বেশি করে করেছে সেই কর্মগুলোকে আচরিত কর্ম বলে। এইসকল কর্ম যদি অকুশল হয় তবে মৃত্যু মুহুর্তে জীবের চিত্তে অনুতাপ উৎপন্ন হয় এবং কুশল হলে প্রীতি উৎপন্ন হয়। উপরোক্ত গুরু কর্ম ও আসন্ন কর্মের অভাবে এই আচরিত কর্মই জীবের পরবর্তী জন্ম নির্ধারণ করে। তাই সকলের উচিৎ কুশল বা সৎ কর্ম বারংবার সম্পাদন করা। এবং অকুশল কর্ম সর্বভাবেই পরিত্যাগ করা। (ধর্মপদ, পাপবর্গ ১১৮-১১৯ গাথাদ্বয় দেখুন।)
(৪) উপচিত কর্ম- জীবগণ বর্তমান ও অতীত অতীত জন্মে অনেক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কর্ম করে যেগুলো বৃহৎ কর্মশক্তিদ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ঠিক পরবর্তী জন্মে ফল প্রদান করতে পারে না। কিন্তু এগুলো ক্ষুদ্র হলেও সংখ্যায় বেশি হবার দরুণ শক্তিশালী হয়ে গুরুকর্ম-আসন্নকর্ম-আচরিত কর্মের অভাবে এই উপচিত কর্মই পরবর্তী জীবনে ফল প্রদান করে।
উল্লেখ্য, গুরুকর্ম-আসন্নকর্ম-আচরিত কর্ম ঠিক পরবর্তী জীবনে একটির অভাবে অন্যটি ফল দেয়, এবং অকুশল গুরুকর্ম ছাড়া আসন্ন ও আচরিত কর্ম নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হলে ফল প্রদানের সামর্থ্য রাখে না। কিন্তু এই আচরিত কর্ম হতে নিষ্কৃতি পাওয়া অতীব দুষ্কর। বলা হয়েছে, জীব যে সকল কর্ম করে সেগুলোর অতি অল্পই বিরুদ্ধ কর্মশক্তিদ্বারা প্রতিহত হয় এবং এগুলো জীবের চিত্তপ্রবাহে প্রচ্ছন্ন থাকে। সুযোগ পেলেই ফল দেয়।
‘কর্ম’, কৃত্যানুসারে চার প্রকার, যেমন- (১)জনক কর্ম- যেটি অতীত অতীত কর্মের প্রভাবে বিভিন্ন কুশল-অকুশল কর্ম গঠন করে।
(২) উপস্তম্ভক বা সহকারী (উপকারী) কর্ম- এটি জনক কর্মকে সাহায্য করে। জনক কর্ম যদি কুশল কর্ম তৈরী করে তবে উপস্তম্ভক বা সহকারী কর্মটি সেই কুশল কর্ম বৃদ্ধিতে উপকার বা সাহায্য করে। জনক কর্ম অকুশল হলে উপস্তম্ভক বা সহকারী কর্মটি সেই অকুশল কর্ম বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
(৩) উৎপীড়ক কর্ম- অতীতের শক্তিশালী কর্মের দ্বারা এটি পূর্বোক্ত উপস্তম্ভক বা উপকারী কর্মের সাথে বিরোধ ঘটায়, বাধা দেয়, দুর্বল করে। যেমন, প্রখর রোদে কেউ ধান শুকোতে দিল বৃষ্টি এসে বাধা দিল, কোন ছাত্র পড়তে বসল কোনও বন্ধু এসে পড়তে সমস্যা সৃষ্টি করল। কারো ভাল মেধা আছে তবে আর্থিক কারণে পড়তে পারছে না। এখানে ধান শুকোনো, ছাত্রের পড়তে বসা, ছাত্রের মেধা হলো উপস্তম্ভক কর্ম আর বৃষ্টি, বন্ধুর দ্বারা ছাত্রের পড়ায় সমস্যা সৃষ্টি বা মেধাবী ছাত্রের আর্থিক অবস্থা হলো উৎপীড়ক কর্মশক্তি। উপস্তম্ভক কর্ম যদি কুশল হয় তবে এই উৎপীড়ক কর্মটি অকুশল হবে আর উপস্তম্ভক কর্ম অকুশল হলে উৎপীড়ক কর্মটি কুশল হবে।
(৪)উপঘাতক কর্ম- উপঘাতক কর্মও উৎপীড়ক কর্মের মতোন, তবে অধিক শক্তিশালী। উৎপীড়ক কর্ম শুধু বিরুদ্ধ কর্মকে বাধা দিয়ে ও দুর্বল করেই ক্ষান্ত হয়। তবে উপঘাতক কর্ম বিরুদ্ধ কর্মকে পুরোপুরি পরাজিত করে নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে। বিরুদ্ধ কর্ম অকুশল হলে উপঘাতক কর্ম সেটিকে পরাস্ত করে তা কুশলের দিকে নিয়ে যায়। পক্ষান্তরে বিরুদ্ধ কর্ম কুশল হলে উপঘাতক কর্ম সেটিকে পরাজিত করে অকুশলের দিকে নিয়ে যায়।
#ফলদানের_সময়_অনুসারে_চার_প্রকার_কর্ম–
(১) দৃষ্টধর্ম বেদনীয় কর্ম- এই কর্ম ইহজীবনেই ফল প্রদান করে। এই জাতীয় কর্মগুলো কুশল হোক বা অকুশল হোক, যদি সেগুলো অতি নিকৃষ্ট বা অতি উৎকৃষ্ট হয় তবে এ জন্মে ফল অবশ্যই ভোগতে হয়। কিন্তু, এই কর্মগুলো যদি ইহজীবনে কোনও কারণে বিরুদ্ধ কর্মশক্তিদ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ফল দিতে না পারে তবে আর কখনোই ফল প্রদান করতে পারে না; নিষ্ফলা বা বন্ধ্যা হয়ে যায়।
(২) উপপাদ্য বেদনীয় কর্ম- এই জাতীয় কর্মগুলো ঠিক পরবর্তী জন্মেই ফল দেয়। উপরোক্ত দৃষ্টধর্ম বেদনীয় কর্মের মতোন এই কর্ম যদি অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী বিরুদ্ধ কর্মশক্তি দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে পরবর্তী জন্মে ফল প্রদান করতে না পারে তবে তৃতীয় জন্ম হতে আর ফল প্রদান করতে পারে না। এই কর্ম যদি কোন ব্যক্তি একাধিক করে তবে একটিই ফলদায়ী হবে বাকিগুলো ব্যর্থ বা নিষ্ফলা হবে। যেমন, দেবদত্ত সঙ্ঘভেদ ও বুদ্ধপাদ হতে রক্তপাত জাতীয় দুটি গুরুকর্ম করলেও একটি ব্যর্থ হয়ে গেছে। আরো স্পষ্টভাবে বলতে গেলে কোন ব্যক্তি যদি ১০০টিও খুন করে তবে একবারই তার মৃত্যুদ- কার্যকর করা যায়।
(৩) অপরপর্যায় বেদনীয় কর্ম- জীবের তৃতীয় জন্ম হতে পূর্ণমুক্তি অর্থাৎ অরহত্ত্ব ফল লাভ করে নির্বাণ লাভ না করা অবধি এই কর্ম যখনই সুযোগ পায় তখনই ফল প্রদান করে। এ জাতীয় অকুশল কর্মকে উপলক্ষ্য করেই বুদ্ধ বলেছেন, আকাশ, সমুদ্র, পর্বতগুহা যে স্থানেই জীব অবস্থান করুক না কেন কর্মের ফল হতে নিস্তার নেই। (ধর্মপদ-পাপবর্গ-১২৭ নং গাথা)।
(৪) অহোসি কর্ম- যে সকল কুশল বা অকুশল কর্মগুলো বিরুদ্ধ কর্মশক্তি দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত বা দুর্বল হয়ে ফল প্রদান করতে না পেরে নিষ্ফলা হয়ে যায়, বন্ধ্যা হয়ে যায় সে সকল কর্ম সমূহকে অহোসি কর্ম বলে। ‘অহোসি’ শব্দের অর্থ হলো একদা ফল প্রদানের শক্তি ছিল কিন্তু কারণবশতঃ দুর্বল বা ফলহীন হয়ে গেছে। উল্লেখ্য, পূর্বোক্ত, অপরপর্যায় বেদনীয় কর্ম ও অকুশল গুরুকর্ম বাদে অন্যান্য কর্মগুলো যথাসময়ে ফল প্রদান করতে না পারলে ফলহীন বা নিষ্ফলা হয়ে যায়। এভাবে ১২ প্রকার ভাগে কর্মকে বিভাজিত করা হয়েছে।
অঙ্গুলিমাল যেহেতু পঞ্চ আনন্তরিক কর্ম করেন নি, তাই তিনি পূর্ব অরহত্ত্ব লাভের হেতু বশতঃ, বুদ্ধের সরাসরি উপদেশে, শক্তিশালী পারমীর গুণে ইহজীবনের কৃত অকুশল কর্মকে পরাজিত করেন এবং অরহত্ত্ব ফলে প্রতিষ্ঠিত হন। আর, অরহৎ-এর পুনর্জন্ম নেই, তদ্বেতু তিনি লঘু ফল ভোগ করেছিলেন। কর্মগুলো ফল পূর্ণাঙ্গরূপে দিতে না পেরে অনেকটাই অহোসি কর্মে পরিণত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু যদি অঙ্গুলিমাল মাতৃ হত্যা বা তৎজাতীয় অকুশল গুরুকর্ম করতো তবে তিনি অরহত্ত্ব ফল লাভ তো করতোই না বরঞ্চ নরক গমন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়তো।
উদাহরণ হিসেবে বলা চলে, মগধরাজ অজাতশত্রুর পূর্ব মার্গফল লাভের হেতু থাকা সত্ত্বেও পিতা বিম্বিসারকে হত্যার মত গুরু অকুশল কর্ম করায় তিনি ইহজীবনেই পুত্র উদায়িভদ্রের হাতে নিহত হয়ে দৃষ্টধর্মবেদনীয় কর্মফল যেমন ভোগ করেন তদ্রুপ গুরুকর্মের অবশ্যম্ভাবী ফলসরূপ মৃত্যুর মত নিরয়গামী হয়েছিলেন।
#সহায়ক_গ্রন্থ:
১. কর্মতত্ত্ব-শ্রী জ্যোতিঃপাল স্থবির, ২.থেরগাথা,
৩. ধর্মপদ, শ্রী ধর্মাধার মহাস্থবির, ৪. অজাতশত্রু- শ্রী শীলালংকার স্থবির।