বৌদ্ধ ধর্ম দাহক্রিয়া সম্পর্কে কি বলে?
—অাশিন ধর্মপাল

বুদ্ধের সময়কালে দাহক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তথাগতের জীবনী বইটি পড়তে পারেন৷ বা বিভিন্ন কাহিনী পড়লেও পেতে পারেন৷

এর অনেক অাগে অামার টাইম লাইনে একটা পোষ্ট করেছিলাম৷ সেখানে প্রশ্ন করা হয়েছিল “পরিক্ষার দিনে যদি জানতে পার যে তোমার মা কিংবা বাবা কালগত হয়েছে তাহলে তুমি পরীক্ষা দিতে যাবে নাকি তাদের অন্তেষ্ঠি ক্রিয়ায় যাবে?” উত্তরটা ছিল এই রকম, ” মা বাবার প্রতি সন্তানের যে দায়ভার রয়েছে সেগুলি প্রত্যেক সন্তানের তার মাতাপিতার মৃত্যুর পূর্বেই পূরণ করা বাঞ্ছনীয়৷ অার যদি মাতা পিতার প্রতি পূর্ব হতেই করণীয় কর্মগুলি সম্পাদন করা হয়ে থাকে তাহলে মৃত্যুর পর সন্তানের ঐ মুহূর্তে উপস্থিত থাকা বা না থাকা দুটোই সমান৷ তাই অবশ্যই পরীক্ষা দিতে যাওয়া উচিত৷ ফিরে এসেও পূণ্য কর্ম সম্পাদন করতে পারে”

অভিধর্মের দৃষ্টিতে দাহক্রিয়া কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ?
————————————————————————————————
এর অাগে জানা উচিত সত্বর গতি কিসের উপর নির্ভর করে৷

জানি, উত্তরটি সকলেই জানেন৷ তারপরও সামান্য বলছি৷ মরণাসন্নে সত্বার জবনচিত্ত সমূহের উপরই নির্ভর করে তার গতি৷ অার যেই মুহূর্তে তার চ্যুতি ঘটে কষ্মিন কালের ব্যবধানেই অর্থাৎ এক অন্তরকালেরও কম সময়ে অপর এক যোনিতে প্রতিসন্ধি গ্রহন করে ফেলে(এখানে জানা উচিত, প্রতিসন্ধি মানে ভূমিষ্ঠ হওয়া নয়৷ কেবল অালম্বন হওয়া৷ পালিতে যাকে ‘উপপজ্জন্তি’ বলা হয়) অার এইদিকে এই চ্যুতি চিত্ত ও ঐদিকে প্রতিসন্ধি চিত্ত এই দুই চিত্তের অন্তরকাল এতই সূক্ষ্ম যে তথাগতের পঞ্চচক্ষুতেও ঐ অন্তরকালকে নির্ধারন করা কঠিন৷ অর্থাৎ, চ্যুতি চিত্ত হওয়ার সাথে সাথেই পূর্ব জবন চিত্তের কর্মের শক্তিতে সত্বা অপর এক যোনিতে প্রতিসন্ধি গ্রহন করে ফেলে৷ যেটাকে প্রত্যেয় অনুসারে অনন্তর প্রত্যেয় বলা হয়৷

অার এই প্রতিসন্ধি চিত্ত যাতে মহা কুশল বিপাক জ্ঞাণ সম্প্রযুক্ত হয় সেকারণে পূর্ব হতেই মরণাসন্ন ব্যক্তির নিকট কোন বিজ্ঞ ভিক্ষু, অভিজ্ঞ উপাসককে ডেকে পাশে বসিয়ে সূত্র দেশনা, পরিত্রান পাঠ, বা ধর্ম দেশনা করাতে হয়৷ মরণাসন্ন ব্যক্তির জন্যে ঐ চিত্তই নির্ধারণ করবে তার অপর যোনির প্রতিসন্ধি৷ তাই চ্যুতি চিত্তের পূর্ব জবন চিত্তসমূহ যাতে মহা কুশল বা তার সাথে জ্ঞাণসম্প্রযুক্ত হয় তার ব্যবস্থা করাটাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ৷

অার তাই, তথাগতের সময়কালে ঘটে যাওয়া এমন অনেক উপমা অাছে, যারা মৃত্যুর পূর্বে অগ্রশ্রাবক সারিপুত্রের নিকট বা মহাশ্রাবকগণদের নিকট ধর্ম শ্রবণ করে মার্গত্ব ও ফলত্ব লাভ করেন৷ এক উপাসক যিনি মৃত্যুর পূর্বে ভিক্ষুর সংঘের নিকট হতে সূত্র শ্রবণের একপর্যায়ে দেবতার উদ্দেশ্যে কোলাহল না করার জন্যে বলেন৷ জল্লাদের ধারাল খর্গের সামনে মৃত্যুর প্রহর গুনা মরণাসন্ন ব্যক্তিকে অায়ুষ্মান সারিপুত্র সয়ং গিয়ে ধর্ম দেশনা করেন৷ অার এই প্রত্যেকটি ঘটনাগুলি দেখলে স্পষ্ট বুঝা যায় যে সত্বার চ্যুতির পূর্বে তাকে তার কৃত পূণ্যকর্মগুলিকে সরণ করিয়ে দেয়া, নির্ভয়তা দেয়াটাই অধিক মহত্ব৷ অার তাই তথাগতের সময়কালে জ্ঞাণী উপাসক উপাসিকাগণ তেমনটাই করত৷
(খুদ্দক নিকায়)

অর্থাৎ, চ্যুতি চিত্ত হওয়ার সাথে সাথেই কষ্মিনকালের ব্যবধানে অপর এক যোনিতে প্রতিসন্ধি গ্রহণ করায় থেকে যাওয়া চতূর্মহাভূতের এই শবদেহটিকে যে যত যা কিছুই করুক না কেন অপর যোনিতে প্রতিসন্ধি নিয়ে ফেলা সত্বার উপর কোন প্রভাব পরে না(অভিধর্মের দৃষ্টিকোণে)৷

(একটি কাহিনী মনে পরল৷ সাগাইং’এ ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা৷ মেডিকেলে পড়া এক ছাত্র এক সময় দাহক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে৷ ফেরার সময় শ্মসান হতে একটি পূরাতণ অস্থি নিয়ে অাসে৷ এসে পড়ার টেবিলের উপরেই রেখে দেয়৷ পড়তে বসে হাতে নিয়ে দেখতে থাকে৷ হঠাৎ নিয়ে পরে গেল সেটি৷ হাত দিয়ে না নিয়ে পা দিয়েই কুড়ে নিল সেই৷ ঐদিন রাতেই স্বপ্নে কাল অার কুৎসিৎ এক লোক এসে বলল “অামার এতো পছন্দের অস্থিকে তুমি অবমাননা করলে? সাবধান” এই বলেই চলে গেল৷ অাধুনিক যুগের ছেলে, পাত্তাই দিল না৷ পরের দিনও নিচে পরে গেলে একইভাবেই পা দিয়ে তুলে নেয়৷ স্বপ্নে দেখল, গতকালকের লৌকটাই অাসছে৷ এসেই তার গলা ধরে চাপতে শুরু করেছে৷ এমনভাবে চাপছে যেন প্রাণবায়ুটাই বের হয়ে যাবে৷ চোখদুটিও যেন বাইরে এসে যাচ্ছে৷ এমন সময় ত্রিশরণের কথা মনে পরে গেল৷ সেগুলি অাবৃতি করতে ঘর্মাক্ত শরীরে জেগে গেল৷ “অাসলেই কি বাস্তব নাকি স্বপ্ন!” ভেবে গলায় হাত দিয়ে দেখল অাসলেই সত্য৷ গলায় প্রচন্ড ব্যাথা, অার অায়নায় গিয়ে যখন দেখল তখন অারো ভয়ঙ্কর৷)
অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্বে যদি শরীরের উপর মায়া থাকে তাহলে ঐ শরীরকে কেন্দ্র করেই প্রেতযোনিতে গিয়ে প্রতিসন্ধি নেয়৷) যে চলে যাওয়ার সে কতো অাগেই চলে গেছে৷

(তথাগতের সময়কালে তথাগত সয়ং কিংবা তাঁর মহাশ্রাবকগণ উপাসকদের দাহক্রিয়া সম্পন্ন করাতেন কি?)
একদিন শাসনা দায়িকা বিশাখা বিহারে এসে তথাগতে সম্মুখে ক্রন্দন করছিল৷ তথাগত প্রশ্ন করলে উত্তরে বলেন তার এক নাতনীর দাহক্রিয়া করে অাসছে৷ অার এই উপমাটি যদি গভীরভাবে লক্ষ্য করেন তাহলেও বুঝতে পারবেন যে, যিনি শাসনের মাতা, সয়ং বিশাখাও তার নাতনীর দাহক্রিয়ায় তথাগত বা তাঁর কোন শ্রাবকগণকে অামন্ত্রন করেননি৷

অার যদি দাহক্রিয়া সম্পর্কে বলতে হয়, তাহলে মহাবগ্গের চীবর খন্ধকটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়ার অনুরোধ রইল৷
অার তাছাড়া বিশুদ্ধি মার্গের পাংশুকুলিক স্কন্দকেও পড়ার অনুরোধ রইল৷

তথাগত সয়ং বা তাঁর সময়কালে ভিক্ষুগণ উৎকৃষ্ট ধূতাঙ্গের জন্যে শ্মসানেই বেশি যেতেন৷ সেখানের মৃত শব দেহ হতেই শেত বস্ত্র সংগ্রহ করে তা বৃক্ষের ছাল হতে রং তৈরী করেই চীবরের কপ্পিয় রংকে গ্রহণ করে চীবর তৈরী করতো৷ অার এই দিক দিয়ে বিবেচনা করলে তথাগতের সময়কালে দাহক্রিয়া করা তেমনটা ছিল না৷ যে যেমনটা পারত তেমনটাই করত৷

দাহক্রিয়ায় কেন ভিক্ষুগণদের যাওয়া উচিত?

দাহক্রিয়ায় ভিক্ষুগণকে এইজন্যে অামন্ত্রন করা হয়, যাতে অনুত্তর পূণ্যক্ষেত্র তথা অনুত্তর ভিক্ষুসংঘকে দানের মাধ্যমে যেই অপরিমেয় কুশল ফল পাওয়া যায় তার ভাগটিকে পরলোকগত সত্বার উদ্দেশ্যে দান করা৷ অার অনুত্তর ভিক্ষুসংঘ পদার্পণ না করা মানে ঐ মহাপূণ্য কর্ম সম্পাদন করতে না পারা৷

ভিক্ষুগণদের কি অবশ্যই যেতে হবে দাহক্রিয়ায়?

যদি গ্রামের কোন শীলবান উপাসক বা উপাসিকা না থাকে তাহলে ভিক্ষুগণকে অবশ্যই যাওয়া উচিত৷ যেহেতু পূণ্যদানের ক্ষেত্রে ছয়টি অঙ্গ অাছে৷ তার মধ্যে একটি হল দুঃশীলদের দ্ধারা দান করা পূণ্যরাশি পরলোকগত সত্বা কখনোই লাভ করতে পারে না৷ এই অঙ্গটি কেবল উপাসক বা উপাসিকাদের জন্য নয়৷ যদি পূন্যরাশি দান করা ভিক্ষুটিও সয়ং দুঃশীল হন তাহলেও পরলোকগত সত্বা এই পূণ্যরাশি লাভে অক্ষম হবেন৷ যদি কোন শীলবান উপাসক বা উপাসিকা থাকে তিনি সয়ং বিহারে এসে সংঘ কর্ম সম্পাদন করে সেই পূণ্যফল দাহক্রিয়ায় গিয়ে দান করতে পারেন৷ অারেকটি হলো পরলোকগত সেই সত্বাকে অামন্ত্রন জানানো৷ অনেকে ভুলবশত অামন্ত্র না জানিয়েই পূণ্যরাশি দান করেন৷ অামন্ত্রন না জানিয়ে যতবারই পূণ্যরাশি দান করা হোক না কেন সে তা লাভ করতে পারে না৷

মায়নমারের কোন কোন জায়গায় দেখা যায়, মৃত ব্যক্তিকে বিহারে নিয়ে অাসেন৷ অতপর সংঘকর্ম বিহারেই সম্পাদন করে ভিক্ষু সয়ং পূণ্যরাশি দান করেন৷ অতপর উপাসকগণ সেই শবদেহ শ্মসানে নিয়ে নিজেরাই দাহ করেন(এই নিয়মটি মন্দ নয়)৷
তাই পুনঃ বলছি, যদি শীলবান কেউ না থাকে তাহলে অবশ্যই ভিক্ষুসংঘকে সেখানে গিয়ে পরলোকগত সত্বাকে পূণ্যরাশির ভাগিদার করা উচিত৷

দাহক্রিয়া অার ভূগর্ভস্থ করার মধ্যে কি পার্থক্য?

এই প্রশ্নের উত্তর মায়ানমারের এক সেয়াড’র কথাই বলব৷ যিনি বিনয়াগুরুকা যিনি বিনয়ে সুদক্ষ, সদাচারী এবং শীলবান তিনি মৃত্যুর পূর্বে বলেছিলেন “অামার মৃত্যুর পর বেশি কিছু লাগবে না৷ দূরে কোন এক জঙ্গলে মাটি চাপা দিলেই হলো৷ এতে অন্তত ভূগর্বে থাকা ছোট কীটের জন্যে কাজেতো অাসবে৷ পুড়িয়ে ফেললে অযথা কাজের বোঝা, লাভও হয় না”
মায়ানমারে এখনো অনেকে ইটের গুহায় রেখে দেয়, কেউ বা পুড়িয়ে ফেলে৷

অার তথাগতের সময়কালে এক ব্রাক্ষ্মণ ছিলেন৷ মৃত্যুর পূর্বে তার ছেলেকে বলে রাখল যাতে মৃত্যুর পর তার শব দেহটি অমুক পাহাড়ে সলিল সমাধিস্থ করে৷ ব্রাক্ষ্মণের মৃত্যুর পর তার ছেলে তাই করতে গেল৷ তথাগতের সম্মুখুন হলে তার পিতার ইচ্ছার বর্ণনা দেয়৷ তথাগত বলেন “এই একই জায়গায় তোমার পিতা পাঁচশতবার সমাধিস্থ হয়েছে৷ তাই পূর্বের কারণে জায়গাটার প্রতি এখনো ইহ জন্মেও অাসক্ত”

অর্থাৎ বুঝাই যায়, কবর দেয়া হয়েছিল৷ অারকেটি হলো কতো জন্ম জন্মান্তর অাপনি কখনো অগ্নির দ্ধারা দাহিত হয়েছে, কখনো বা পাথবীর নিচে সমাধিস্থ হয়েছেন তার কি কোন ইয়ত্বা অাছে?

“পৃথকজন” অর্থ কি?
“নানাসত্থারানং মুখং উল্লোকেন্তীতি পুথুজ্জনা”
—(পতিসম্ভিদামগ্গ পালি)
অর্থাৎ অনন্তর এই সংসারচক্রে নির্দিষ্ট কোন শরণ নেই৷ এই জন্মে এই সৃষ্টি কর্তার শরণ নিল, তো অন্য জন্মে অন্য এক সৃষ্টি কর্তার শরণ নিল৷ কখনো ইন্দ্রকে, কখন ব্রক্ষ্মাকে, কখনো ভূদেবকে, কখনো অগ্নিকে৷

ধর্মপদে তথাগতের একটি গাথার ন্যায়, শত বছর যেই অগ্নির পূজা করেও তিল পরিমান কোন ফল পাওয়া যায় না, তেমনি অসার, চতুর্মহাভূতে তৈরী এই দেহ, যেই দেহ জীবিতিন্দ্রিয়ের চ্যুতির পর অকেজো এক শবদেহ ছাড়া কিছুই নয়, তাকে পুড়ালে মঙ্গল হবে নাকি ভূর্গবস্থ করলে মঙ্গল হবে এমন তর্কে অাছেন৷ তথাগতের ভাষিত দেশিত ৩৮প্রকার মঙ্গল ছাড়া অার কত প্রকার মঙ্গল থাকতে পারে৷
সুতরাং এই পুড়িয়া ফেলা বা কবর দেয়া যার যার ব্যক্তিসত্বার মনের উপরেই নির্ভর করে৷

(বিঃদ্রঃ—তথাগতের সময়কালে মহাপ্রজাপতি গৌতমীসহ অারো অনেককেই অগ্নিদাহ করা হয়েছিল৷ এমনকি তথাগতের পবিত্র দেহকেও)

(দাহক্রিয়ার কারণ যা হতে পারে)
১/তথাগতের বা তাঁর অর্হত শ্রাবকদয়ের দাহক্রিয়া এই জন্যে করা হয় যাতে পবিত্র অস্থিসমূহকে পূণ্যার্থীগণ পূজা সৎকার করে পূণ্যের ভাগিদার হতে পারে৷ অভিধর্মের দৃষ্টিকে চতূর্মহাভূতের তৈরী এই শরীর তূচ্ছ, কিন্তু লৌকিক দৃষ্টিতে এই নশ্বর দেহের উপর অালম্বন করেই পাতিমোক্ষ, ইন্দ্রীয় সংবরনসহ চতুর্পারিশুদ্ধি শীল, উৎকৃষ্ট ধূতাঙ্গশীল পালন করা এই দেহটি দেব মনুষ্যের সকলে পূজ্য হয়ে যায়৷ অার তাইতো পরিনির্বাপিতের পরেও তথাগতের মৃত দেহকে ঘিরে শতকোটি দেবতা ক্রন্দন করেছিলেন৷ অার তাই উত্তম অাচরণকারীদের অগ্নিদাহ করে তাদের অস্থি নেয়া হয়৷ সেই অনুসারে দাহক্রিয়া বৌদ্ধদের পরম্পরা বললেও ভুল হয় না৷ বিমুক্ত সত্বার জন্যে সকল অবস্থাই এক৷ অার তাছাড়া অগ্নিদাহ না করে ভূগর্ভস্থ করা এমনও অনেক ভিক্ষু অাছেন৷ সুতরাং দাহ করা বা সমাধি দেয়া উভয়ই করা যায়৷

২/যশ ও তার বন্ধুদের সম্পর্কে পড়ে থাকবেন সকলে৷ পূর্বকালে শবদেহ পুড়িয়ে যেই অনিত্য জ্ঞাণ লাভ করেছিল ইহজন্মে তার ফলস্বরূপ মোক্ষম লাভ করে৷ অর্থাৎ শব দেহকে ভূগর্বস্থ করার চাইতে অগ্নিদাহ করলে অনিত্য ভাবনার জন্যে অধিক সহায়ক হয়৷ অার একারণেই সম্ভবত তথাগত সকল ভিক্ষুসংঘের অশুভ ভাবনার জ্ঞাণ দেওয়ার জন্যে সিরিমার দেহের দাহক্রিয়া উপস্থিত ছিলেন৷

শেষ কথা এই যে, দাহক্রিয়ায় যদি ভিক্ষুগণ উপস্থিত থাকেন তাহলে ভাল হয়৷ অার যদি না থাকেন তাহলে বিহারে গিয়ে সংঘ কর্ম সম্পাদন করে সেই পূন্যরাশি কোন এক শীলবান উপাসক বা উপাসিকাও সম্পাদন করতে পারেন৷ এই কাজটি অবশ্য করা যায়৷ যেহেতু বর্তমানে বাংলাদেশে শীলবান ও পণ্ডিত উপাসক উপাসিকাগণ গণনাতীত রয়েছেন৷

অার অন্যটি হলো, ভূগর্ভস্থ করার চাইতে অগ্নিদাহ করাটাই অনিত্য ভাবনার জন্য বিশেষভাবে সহায়ক হওয়ায় সমাধি না দিয়ে অগ্নিদাহ করলে উত্তম হয়৷ এছাড়া বিশেষ কোন কারণ নেই৷

error: Content is protected !!