রাজধানী ঢাকার শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারের অবস্থান মিরপুর-১৩, ঢাকা-১২১৬। বাংলাদেশের প্রখ্যাত বিদ্যায়তন ‘স্কলাস্টিকা’, ও হারম্যান মেইনার স্কুল এন্ড কলেজের পাশে বাংলাদেশ রোড ট্রন্সপোর্ট অটরিটির বিপরীতে ১০ নং মিরপুর গোলচত্তর থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গমনাগমণের বড় রাস্তার সাথে সংযুক্ত, ১০ নং সেকশনে অবস্থিত ‘বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ’কে বুকে ধারণ করে তিন পার্বত্য জেলার তাবৎ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠির একমাত্র বৌদ্ধ মন্দির ‘শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারের অবস্থান। এ বৌদ্ধ বিহারটি প্রতিষ্ঠা করে পার্বত্য বৌদ্ধ সংঘ। ঠিকানা শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহার, প্লট-৪, ব্লক-এ (আহসানউল্লাহ | রোড-১) মিরপুর-১৩, ঢাকা- ১২১৬।
এ বৌদ্ধ প্যাগোডা বা মন্দিরটির স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন ভদন্ত বিমল তিষ্য ভিক্ষু মহােদয়। আজ থেকে ৪৪ চুয়াল্লিশ) বছর আগের কথা। ঢাকা শহরের বুকে সমতল ও আদিবাসী বৌদ্ধদের নিত্য নৈমিত্তিক পূর্জাচনা, প্রার্থনা, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান প্রতিপালনের জন্য একটিমাত্র বৌদ্ধ মন্দির অবস্থিত ছিল। সেটি হল কমলাপুর ধর্মরাজিকা বৌদ্ধ মহাবিহার।
(১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ সাল)দীর্ঘ আটটি বছরের ক্লান্তিহীন সাধনায় বৌদ্ধ আদিবাসী জনগোষ্ঠির জন্যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বুকে একটি স্থায়ী ঠিকানা নির্ধারণ করে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন।১৯৮৩ সালের ২৭ ফ্রেব্রুয়ারি শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন । ১৯৮৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শুরু হয় ।
১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ ফেব্রুয়ারী ৩২ জন অনাথ, অসহায়, ছিন্নমূল ও হতদরিদ্র আদিবাসী বালক ও ৩২ জন বালিকাকে নিয়ে ‘বনফুল চিলড্রেন্স হোমস এর কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।উল্লেখ্য এই বনফুল কমপ্লেক্স এর নির্মাণ কাজ ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত চলে। পরে ২০১৫ সালের ৪ নভেম্বর বুধবার শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারের বর্তমান অনিন্দ্যসুন্দর দাঁড়ানো বুদ্ধ প্রতিমূর্তিটি মৃনাল হক মহোদয় কর্তৃক দাঁড় করানোর কাজটি সুসম্পন্ন করেন।
আনন্দময় পাঠদানের জন্য সুন্দর শ্রেণিশিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম গুরুত্ববহ। এরূপ বিবেচনায় বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজের খোলামেলা সবুজ চত্বরে শিক্ষার্থীদের ক্লাসপূর্ব প্রাত্যহিক অ্যাসেম্বলি হয়ে থাকে। আদিবাসী কলেজে রয়েছে বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন ক্লাব, যাতে শিক্ষার্থীরা নানাভাবে মেধা যাচাইয়ের সুযোগ পায়। বার্ষিক খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পুরস্কার বিতরণ, বিভিন্ন মেলার আয়োজন এবং প্রতিটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উদ্যাপনকালীন নানা আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহশিক্ষা কার্যক্রমের সুযোগ পায়। শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা প্রসারের জন্য প্রতিবছর শিক্ষণীয় স্টাডি ট্যুরের আয়োজন করা হয়।
সুত্রঃ ভদন্ত প্রজ্ঞানন্দ মহাথের ভান্তের এর লিখা তথাগত অনলাইন থেকে সংগৃহীত ।