পুরাকালে রাজা ব্রম্মদত্তের সময়ে বোধিসত্ত্ব এক শুকপক্ষিরুপে জন্মগ্রহন করেছিলেন। তাঁর নাম ছিল রাধ আর তাঁর কনিষ্ঠ ভাইয়ের নাম ছিল প্রোষ্ঠপাদ। বোধিসত্ত্বের শরীরটি বেশ বড় ছিল।
একদিন এক বেধ এই দুটি শুককে ধরে নিয়ে গিয়ে রাজাকে উপহার দিল। রাজা তাদের এক্তি সোনার খাঁচায় রাখলেন। তাদের সোনার পাত্রে মধু মিশ্রিত খই খাওয়াতে লাগলেন। শর্করা বা চিনিমিশ্রিত জল দেবার ব্যবস্থা করলেন। এই ভাবে তাদের যথেষ্ট আদর যত্ন করতে লাগলেন।
তারপর আর এক বেধ একদিন কাল্বাহু নামে ঘোর কাল রঙের এক বানর এনে রাজাকে দিল। রাজা সেই থেকে বানরকে বেশী আদর যত্ন করতে লাগলেন। শুকদের আদর কমে গেল। বোধিসত্ত্ব রাধ সর্বগুণসম্পন্ন ছিলেন। তিনি এজন্য কিছু মনে করলেন না। কিন্তু তাঁর কনিষ্ঠ ভাইয়ের মনে সেরকম উদারতা ছিল না। সে একদিন তার বড় ভাইকে বলল, আগে আমরা কত সুস্বাদু খাবার পেতাম। কিন্তু এখন কিছুই পাই না। তবে চল আমরা বনে চলে যাই।
বোধিসত্ত্ব বললেন, শোন প্রোষ্ঠপাদ, লাভ-অলাভ, সুখ-দুখ, যশ-অযশ, নিন্দা-প্রশংসা সবই অনিত্য। তাই সুখ পরিহার কর।
তবু প্রোষ্ঠপাদ বলল, দাদা তুমি বুদ্ধিমান, কিভাবে বানর তাকে তাড়ানো যায় তার উপায় স্থির কর।
বোধিসত্ত্ব বললেন, কিছুই করতে হবে না। বানর তার নিজের দোষেই বিতাড়িত হবে। তার ভ্রুকুটি ও চখ মুখের ভঙ্গি দেখে রাজকুমারেরা ভয় পাবে। তখন একে তাড়িয়ে দেবে।
বোধিসত্ত্ব যা বলেছিলেন, কিছুদিনের মধ্যে তাই ঘটল। কাল বানরটার ভ্রুকুটি, মুখভঙ্গি ও কান নাড়ানো দেখে রাজকুমাররা ভয়ে চিৎকার করতে লাগল। রাজা বানরটার এই কুকীর্তির কথা জানতে পেরে আদেশ দিলেন, ওকে দূর করে দাও।
সুত্র ঃ জাতকসমগ্র